জট কাটল খড়্গপুর আইআইটিতে। ফি বৃদ্ধির পরিমাণ ৭,৫৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩,৩৫০ টাকা করা হবে— শুক্রবার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন স্থগিত রাখলেন পড়ুয়ারা। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা অ্যাডভান্সড টেকনোলজির গবেষক পড়ুয়া অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ফি বৃদ্ধির পরিমাণ কমানোর জন্য ডিন মারফত ডিরেক্টরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ডিরেক্টর বিষয়টি দেখছেন বলে জেনেছি। ডিরেক্টরের উপর ভরসা রেখেই বিক্ষোভ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।”
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাড়ে ৭ হাজার টাকা ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠকের পরে খড়্গপুর আইআইটির ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, সব দিক বিবেচনা করেই প্রতি সেমেস্টারে এই পরিমাণ ফি বাড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই ছাত্র আন্দোলন ‘অন্যায্য ও শৃঙ্খলা-বিরোধী’ বলেও জানান পার্থপ্রতিমবাবু। তারপরই নতুন করে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন পড়ুয়ারা। হুঁশিয়ারি দেন অনশন-অবস্থানের।
সেই মতো শুক্রবার সকালে খড়্গপুর আইআইটির প্রশাসনিক ভবনের সামনে গবেষক ও এমটেক পড়ুয়ারা জড়ো হন। তবে সেই কর্মসূচি শুরু হতে না হতেই প্রতিনিধি মারফত আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, তাঁরা ফি কমানো নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। এরপর অনশন কর্মসূচি স্থগিত রেখে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসেন পড়ুয়ারা। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে এ দিন কলকাতা থেকে এসেছিলেন ডেমোক্র্যাটিক রিসার্চ স্কলার্স অর্গানাইজেশনের সদস্যরা। ফি বাড়িয়ে গবেষণাকেও ‘সেলফ ফিনান্সিং কোর্সে’র মতো করে দেওয়া হচ্ছে বলে সরব হন তাঁরা।
শেষে বিকেলে কর্তৃপক্ষের তরফে ছাত্রদের ‘হল (হস্টেল) ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ ফি বৃদ্ধির পরিমাণ কমানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়। জানানো হয়, প্রতি সেমেস্টারে ওই খাতে অতিরিক্ত ৭,৫৫০ টাকা নয়, দিতে হবে বাড়তি ৩৩৫০ টাকা। অর্থাৎ পূর্ব ঘোষণার থেকে ৪,২০০ টাকা কম। ২৬ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে বর্ধিত ফি জমা দেওয়ার কথা। তখনই নতুন হারে টাকা জমা দেওয়া যাবে বলে ছাত্রদের জানানো হয়েছে। তবে আইআইটির কর্তারা কেউ এ দিন মুখ খুলতে চাননি। প্রতি সেমেস্টারে ছাত্রপিছু ‘হল (হস্টেল) ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ ফি আগামী জানুয়ারি থেকে বাড়ানো হবে বলে গত ৭ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। এতেই চটেন পড়ুয়ারা। ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় আন্দোলন। রাতভর আইআইটির ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী, রেজিস্ট্রার প্রদীপ পাইন-সহ কয়েকজন অধ্যাপককে ঘেরাও করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। শেষমেশ ফি কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের তরফে অনুপম বলেন, “আমাদের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে কর্তৃপক্ষ রফার পথ খুঁজেছেন দেখে আমরা খুশি। তবে নৈতিক দাবি আদায়ে আমরা ১০ জনের ছাত্র-কমিটি গড়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখব।”