অতিরিক্ত চাপেই কি আত্মঘাতী আইআইটি-র ছাত্র?

পড়ুয়াদের মনের যত্নে কাউন্সেলিং সেন্টার রয়েছে। নতুন প্রতিষ্ঠান ও নতুন পাঠ্যক্রমের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা যাতে সহজে মানিয়ে নিতে পারেন, সে জন্য চালু হয়েছে ইন্ডাকশন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৪
Share:

জি হানিমি রেড্ডি

পড়ুয়াদের মনের যত্নে কাউন্সেলিং সেন্টার রয়েছে। নতুন প্রতিষ্ঠান ও নতুন পাঠ্যক্রমের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা যাতে সহজে মানিয়ে নিতে পারেন, সে জন্য চালু হয়েছে ইন্ডাকশন। তার পরেও খড়্গপুর আইআইটিতে ফের এক ছাত্রের আত্মহত্যায় এই সব আয়োজনের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

বুধবার রাতে আইআইটির মদনমোহন মালব্য হল (হস্টেল)-এ উদ্ধার হয় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমটেক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জি হানিমি রেড্ডি (২৪)-র দেহ। তাঁর বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে। আইআইটি সূত্রে খবর, বুধবার বিকেল থেকে হানিমি হস্টেলের ঘরেই ছিলেন।

এক সহপাঠী ডাকতে এসে দেখেন, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকিতেও সাড়া মেলেনি। পরে নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশ এসে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।

Advertisement

পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা। তবে কী কারণে ওই ছাত্র আত্মঘাতী হলেন, তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার খড়্গপুরে আসেন হানিমির দাদা বেণুগোপাল রেড্ডি। তিনি বলেন, ‘‘ভাই খুব চাপা স্বভাবের ছিল। ওর পড়াশোনা নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল বলে জানতাম না। কী কারণে নিজেকে শেষ করে দিল সেটাই বুঝছি না।’’ এ দিন মৃত ছাত্রের দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার নয়। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

আইআইটি-র মতো প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষার চাপের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বহু পড়ুয়ারই সমস্যা হয়। অবসাদে ভোগেন অনেকে। আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি বুঝেই চালু করা হয়েছে কাউন্সেলিং সেন্টার। কিন্তু এই সেন্টার যথাযথ ভাবে কাজ করে না বলেই অভিযোগ। প্রায় ১২ হাজার পড়ুয়ার জন্য কাউন্সেলার রয়েছেন মাত্র ৭ জন। নিজে থেকে কাউন্সেলিং সেন্টারে যাওয়ার ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মধ্যে অনীহাও দেখা যায়। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক ছাত্রী অন্বেষা সেনগুপ্ত বলেন, “বিটেক পড়ুয়াদের তুলনায় এমটেকে চাপ কম হলেও দ্বিতীয় বর্ষে প্রজেক্টের যথেষ্ট চাপ থাকে। এ ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং সেন্টারের যে ভূমিকা থাকা উচিত তা দেখা যায় না।”

তা ছাড়া, বিটেক পড়ুয়াদের জন্য গত বছর থেকে ‘ইন্ডাকশন’ চালু হলেও এমটেকে এখনও এই ব্যবস্থা চালু হয়নি। এ সব নিয়ে খড়্গপুর আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, “আমাদের কাউন্সেলিং সেন্টার যথেষ্ট সক্রিয়। আমরা নিজস্ব কাউন্সেলার ছাড়াও দু’টি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি। আর এমটেক পড়ুয়াদের জন্যও ইন্ডাকশন চালুর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন