ব্যাঙ্ক ফেঁদেছিল রোজ ভ্যালি, বলছে ইডি

তাদের সাধারণ পরিচয় অর্থ লগ্নি সংস্থা। কিন্তু বাজার থেকে টাকা তুলে রোজ ভ্যালি কার্যত ব্যাঙ্কের ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল বলে মঙ্গলবার আদালতে অভিযোগ করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, ব্যাঙ্কের মতোই আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে নিজেদের বিভিন্ন প্রকল্পে খাটাতেন রোজ ভ্যালির কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৯
Share:

নগর দায়রা আদালতের পথে গৌতম কুণ্ডু। —নিজস্ব চিত্র।

তাদের সাধারণ পরিচয় অর্থ লগ্নি সংস্থা। কিন্তু বাজার থেকে টাকা তুলে রোজ ভ্যালি কার্যত ব্যাঙ্কের ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল বলে মঙ্গলবার আদালতে অভিযোগ করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, ব্যাঙ্কের মতোই আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে নিজেদের বিভিন্ন প্রকল্পে খাটাতেন রোজ ভ্যালির কর্তারা। এই ধরনের ব্যবসার জন্য যে-অনুমতির দরকার হয়, রোজ ভ্যালি তা-ও নেয়নি।

Advertisement

সেবি-র একটি অভিযোগের ভিত্তিতে রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছিল ইডি। এই মামলায় গত ২৫ মার্চ গ্রেফতার করা হয় ওই সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে। পরের দিন তাঁকে ইডি-র হেফাজতে পাঠিয়েছিল আদালত। এই মামলায় চলতি সপ্তাহেই চার্জশিট পেশ করা হতে পারে বলে ইডি-র এক কর্তা এ দিন জানিয়েছেন।

রোজ ভ্যালির কর্ণধারকে এ দিন কলকাতার নগর দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারক গোপালচন্দ্র কর্মকারের এজলাসে হাজির করানো হয়। ইডি-র আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ ভদ্র আদালতে জানান, ইডি আপাতত গৌতমকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে না। তাঁকে জেল-হাজতে পাঠানোর আর্জি জানান তাঁরা। একই সঙ্গে প্রয়োজন অনুযা়য়ী ইডি-র অফিসারেরা যাতে জেলে গিয়ে তাঁকে জেরা করতে পারেন, সেই অনুমতিও চান আইনজীবীরা। বিচারক ৯ এপ্রিল পর্যন্ত গৌতমকে জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। জেরার ব্যাপারে ইডি-র আর্জিও মঞ্জুর করেছেন তিনি।

Advertisement

মাত্র পাঁচ দিন হেফাজতে নিয়েই ইডি গৌতমবাবুকে জেল-হাজতে পাঠানোর আর্জি জানাল কেন?

ইডি-র সূত্রের ব্যাখ্যা, সেবি-র একটি অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রাথমিক ভাবে শেষ। তাই এখন গৌতমকে নিজেদের হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া আদালতের অনুমতি মেলায় প্রয়োজনে জেলে গিয়েও তাঁকে জেরা করতে পারবেন তদন্তকারীরা।

গৌতমের আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় ও সঞ্জয় দাশগুপ্ত এ দিন আদালতে দাবি করেন, রোজ ভ্যালি সরাসরি বাজার থেকে টাকা তোলেনি। তারা যে-ধরনের ডিবেঞ্চার বিক্রি করেছে, তাতে সেবির অনুমোদন প্রয়োজন হয় না। যদিও ইডি-র এক কর্তার বক্তব্য, ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যে-পদ্ধতিতে টাকা তোলা হয়েছিল, তা প্রথাগত ডিবেঞ্চার নয় বলেই গৌতম স্বীকার করেছেন। সেই লিখিত স্বীকারোক্তিও চার্জশিটের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে। চার্জশিটে গৌতম ছাড়াও আরও কয়েক জনের নাম থাকতে পারে বলে জানান তদন্তকারীরা।

গত বৃহস্পতিবার, আদালতে গৌতমের প্রথম হাজিরার দিন রোজ ভ্যালির কয়েকশো এজেন্ট ও কর্মী আদালত-চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে কয়েক জন চিত্রসাংবাদিককে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। তা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালেও এ দিন রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সে-দিন পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা না-থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েন লালবাজারের কর্তারা। এ দিন অবশ্য সকাল থেকেই নগর দায়রা আদালতের চার পাশে কড়া পুলিশি ব্যবস্থা ছিল। গোলমাল হতে পারে আঁচ করে মোতায়েন করা হয়েছিল হেলমেট আর লাঠিধারী পুলিশও। এজেন্ট-সমর্থকেরা জড়ো হলেও কোনও বিক্ষোভ বা গোলমাল হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন