রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
ঠান্ডা ঘরে বসে লিখে দেওয়ার দিন শেষ! লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার তৈরির আগে দেশ ঘুরে সমাজের নানা অংশের নানা মতামত শুনতে হবে। উত্তর দিতে হবে প্রশ্নের। দলের নেতৃত্বের জন্য এমনই নির্দেশ রাহুল গাঁধীর।
কংগ্রেস সভাপতির নির্দেশ মেনে ইস্তাহারের জন্য জনশুনানি করতে বেরিয়ে পড়ছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম। সঙ্গে সাংসদ, অধ্যাপক রাজীব গৌড়া। চিদম্বরম ও গৌড়া এআইসিসি-র নতুন ইস্তাহার কমিটির যথাক্রমে সর্বভারতীয় চেয়ারম্যান এবং আহ্বায়ক। ইস্তাহার কমিটির প্রতি সদস্যদের একটি করে বিষয় বেছে দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে তাঁরা বিশদে তথ্যানুসন্ধান করবেন এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের কাজে সহায়তার জন্য এআইসিসি-র রিসার্চ শাখাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে রিসার্চ শাখাই চিদম্বরমদের জন্য মত সংগ্রহের আসরের বন্দোবস্ত করছে।
চিদম্বরমদের ইস্তাহার অভিযান শুরু হচ্ছে মহারাষ্ট্র থেকে। চলতি সপ্তাহেই তাঁর এবং ইস্তাহারের একটি সাব-কমিটির যাওয়ার কথা মুম্বইয়ে। ঠিক হয়েছে, চিদম্বরম এবং গৌড়া কলকাতা আসবেন দেওয়ালির সময়ে। আগামী ৮ নভেম্বর তাঁরা মুখোমুখি হবেন এই শহরের অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) সঙ্গে জড়িত এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের। তাঁদের মত শুনবেন, তার পরে থাকবে প্রশ্নোত্তরের পর্ব। এআইসিসি-র সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অশোক গহলৌত বিভিন্ন রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, ইস্তাহার কমিটির জনশুনানি বা মত বিনিময়ের আসর হতে হবে ‘অরাজনৈতিক’ জায়গায়। অর্থাৎ কোনও ভাবেই কংগ্রেস দফতরে নয়। বিপুল মানুষের ভিড়ে এমন আসর হতে পারে না, তাই ২০০-৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই কলকাতায় চিদম্বরমের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে মৌলালি যুব কেন্দ্র।
প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন ইস্তাহার কমিটির চেয়ারম্যান এখন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং আহ্বায়ক কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, এআইসিসি-র ইস্তাহার কমিটি এত সক্রিয় হলে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট নেতাদেরও তৎপরতা বাড়াতে হবে। তাঁদেরও নামতে হবে নিজেদের মতো করে মতামত সংগ্রহে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘রাজনীতি, অর্থনীতি বা প্রশাসনের বিষয়ে কংগ্রেসের নিজস্ব ভাবনা তো আছেই। এত দিন তার ভিত্তিতেই ইস্তাহার লেখা হত। কিন্তু এ বার কংগ্রেস সভাপতির পরামর্শে এমন প্রক্রিয়ায় যাওয়া হচ্ছে, যাতে সমাজের নানা অংশের আকাঙ্খার প্রতিফলন থাকে ইস্তাহারে।’’
প্রশ্ন থাকছে, বিভিন্ন রাজ্যে নানা মত বিনিময়ের আসর থেকে যা যা উঠে আসবে, তার কলেবর তো বিপুল হবে? ওই কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, ‘‘সেই জন্যই হাতে সময় নিয়ে কাজ শুরু করা হচ্ছে। রিসার্চ শাখাও প্রাথমিক সাহায্য করবে। তার পরে বিভিন্ন প্রস্তাব থেকে আরও ঝা়ড়াই-বাছাই করে ইস্তাহার চূড়ান্ত হবে।’’