মহল্লার মান রাখলেন ভিক্ষুক-পুত্র

মাধ্যমিকে ৬০৮ পেয়েছিল শ্রীকৃষ্ণ। তা জানতে পেরে এক ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার বই, খাতা ও টেবিল কিনে দেন। আর এক এক জন করে মাসে মাসে কিছু টাকা দেন। রংমালা যে রোজ কাজ পান, তা নয়।

Advertisement

রাজকুমার মোদক

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০৩:১৩
Share:

গর্বিত: বাবার সঙ্গে ধূপগুড়ির শ্রীকৃষ্ণ সরকার। —নিজস্ব চিত্র।

ভাতের থালায় কোনও দানা সরু তো কোনওটা মোটা। কোনওটা সাদা তো কোনওটা লালচে। আর এ ভাবেই খেতে অভ্যস্ত শ্রীকৃষ্ণ সরকার।

Advertisement

তাঁর মা রংমালা সরকার জানান, পরীক্ষার সময়ও ছেলেকে এমনই ভাত বেড়ে দিয়েছেন। তাঁর স্বামী হরিদাসবাবু চোখে দেখতে পান না। ভিক্ষাজীবী। যে দিন যেমন চাল পান তাই দিয়েই রান্না হয়। তেল নুন জোটে রংমালার দিনমজুরির আয় থেকে। ছেলেকে পড়িয়েছেন পড়শিদের সাহায্য নিয়ে। ধূপগুড়ির বৈরাতিগুড়ি হাইস্কুলের সেই ছাত্র শ্রীকৃষ্ণ উচ্চমাধ্যমিকে ৪৩১ পেয়ে মান রেখেছেন মহল্লার।

মাধ্যমিকে ৬০৮ পেয়েছিল শ্রীকৃষ্ণ। তা জানতে পেরে এক ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার বই, খাতা ও টেবিল কিনে দেন। আর এক এক জন করে মাসে মাসে কিছু টাকা দেন। রংমালা যে রোজ কাজ পান, তা নয়। তাই চিন্তা, এ বার তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের পড়ার খরচ দেবেন কী করে? শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা, অঙ্কে অনার্স নেবেন। অঙ্কে পেয়েছেন ৯১। মা রংমালা বলেন, “দিনমজুরি করছিই। ছেলেকে কলেজে পড়ানোর জন্য দরকার হলে মানুষের পায়ে পড়ব।”

Advertisement

কীর্তন গাইতেও ভালবাসে শ্রীকৃষ্ণ। এলাকায় নামও আছে তাঁর।

হরিদাস বলেন, ‘‘আমি ভিক্ষা করি। কিন্তু ছেলে আমার মাথা উঁচু করে রেখেছে। ভবিষ্যতে আরও উঁচু করবে, আমি জানি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন