অর্থাভাবে থমকে প্ল্যাটফর্মের কাজ

প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করলেও নুঙ্গি, পিয়ালি, বালিগঞ্জ, গড়িয়া, বারুইপুর-সহ একাধিক স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজ করা যাচ্ছে না বরাদ্দ টাকার অভাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৩৬
Share:

শিয়ালদহ স্টেশন। ফাইল চিত্র।

ঘটা করে রেলে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে কথা বললেও টাকার অভাবে শিয়ালদহ ডিভিশনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজ।

Advertisement

প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করলেও নুঙ্গি, পিয়ালি, বালিগঞ্জ, গড়িয়া, বারুইপুর-সহ একাধিক স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজ করা যাচ্ছে না বরাদ্দ টাকার অভাবে।

কয়েক কোটি টাকা বকেয়া পড়ায় কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারেরা মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ দিকে কোথা থেকে কী ভাবে টাকার সংস্থান হবে, তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারছেন না রেলের আধিকারিকেরাও। কারণ গত দু’বছর ধরে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির খাতে বাজেটে কোনও অর্থই বরাদ্দ হয়নি শিয়ালদহ ডিভিশনে। রেলের কর্তারা চেষ্টা করে অন্য তহবিলের টাকাও ওই খাতে আনতে পারেননি। ফলে টাকা চেয়ে হয়রান হওয়া ঠিকাদারেরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। রেলকর্তারাও নতুন করে কাজ শুরু করার জন্য কাউকে চাপ দিতে পারছেন না। অথচ প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা কম হওয়ার কারণেই মাস কয়েক আগে নুঙ্গিতে এক যাত্রীর ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু ঘটে। প্রতিবাদে যাত্রীরা টানা কয়েক ঘণ্টা রেল অবরোধ করেন। অবরোধ তুলতে গিয়ে দ্রুত যাত্রীদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন রেলকর্তারা। কিন্ত তার পরে কয়েক মাস কেটে গেলেও কী ভাবে ওই স্টেশনে কাজ শুরু হবে বলতে পারছেন না কেউই।

Advertisement

পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে শিয়ালদহ শাখার ১৮৮টি স্টেশনের মধ্যে ৫১টি স্টেশনের কাজ মাঝপথে থামিয়ে দিতে হয়েছে। ৭৬টি স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজ শুরুই করা যায়নি।
বাকি ৬১টি প্ল্যাটফর্মে কাজ হলেও সেখানে ঠিকাদারদের অনেকেরই বকেয়া পড়ে রয়েছে।

রেল সূত্রে খবর, ২০১০-১১ সাল নাগাদ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড বা উন্ননয়ন তহবিলের টাকায় প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধির কাজের পরিকল্পনা
করা হয়। প্রথম পর্বে ৫৫টি স্টেশনে ওই কাজের পরিকল্পনা হয়। পরে অন্যান্য স্টেশনকেও ওই কাজের আওতায় আনা হয়। রেল সূত্রে খবর, ওই সময় কাজের টেন্ডার ডাকা
হলেও তা শুরু করতে আরও কয়েক বছর লেগে যায়। তত দিনে প্ল্যাটফর্মের এবং রেলনাইনের পাথরের উচ্চতার মধ্যে ফারাক কমে আসায় কাজের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। পরে কাজ শুরু হওয়ার পরে তা শেষ করতে গিয়ে খরচ অনেক বেড়ে যায়।
শুরুর দিকে ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ডিএফ) থেকে কিছু কিছু করে টাকা পাওয়া গেলেও গত জানুয়ারি মাসের পর থেকে আরও কোনও টাকা দেওয়া হয়নি।

পর পর দু’টি বাজেটে কোনও টাকা না আসায় রেলের আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও রেল কর্তাদের একাংশের দাবি, সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভোটের বছর হওয়াতে বাজেট নিয়ে কিছু অসুবিধে হয়েছে। তবে তা সাময়িক। রাষ্ট্রীয় রেল সংরক্ষক কোষ থেকে টাকা ওই তহবিলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। মাস কয়েকের মধ্যে সমস্যা মিটতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন