বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
শিল্পের জন্য মূল সমস্যা জমি। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে দু’দিনের পঞ্চম বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে (বিজিবিএস) যোগ দিয়ে সরকারের কাছে সেই সমস্যার কথাই তুলে ধরা হবে বলে জানাল পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন বণিক সংগঠন। সেই সঙ্গে জেলার শিল্প-সম্ভাবনা কোথায়, জানানো হবে তা-ও।
জেলা ভাগের পরে তৈরি হয়েছে ‘পশ্চিম বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি পবন গুটগুটিয়ার দাবি, একটি লৌহ-ইস্পাত সংস্থা জেলায় নতুন শাখা খোলার জন্য প্রায় চারশো কোটি টাকা লগ্নি করতে প্রস্তুত। কয়েকটি সংস্থা আরও প্রায় ৭০ কোটি টাকা লগ্নি করবে। কিন্তু এই সংস্থাগুলির কাছে প্রধান সমস্যা জমি। পবনবাবু বলেন, ‘‘আমরা সরকারের কাছে সস্তায় শিল্পের উপযুক্ত জমি, বিদ্যুৎ ও জলের ব্যবস্থা করার আবেদন জানাব। এ সবের ব্যবস্থা হলে লগ্নি আসবে।’’
সেই সঙ্গে বার্নপুরের ঢাকেশ্বরী লাগোয়া এলাকায় শিল্পতালুক তৈরির জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানান পবনবাবু। তাঁদের সংগঠনটি জানায়, এই প্রস্তাবের কারণ, ওই এলাকার প্রচুর ফাঁকা জমি রয়েছে। শিল্পোদ্যোগীরা এক সঙ্গে প্রয়োজনীয় জমি পাবেন। কাছেই রয়েছে দামোদর। ফলে জল-সমস্যা হবে না। এখান দিয়ে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একটি রেলপথ। ফলে যোগাযোগেরও সমস্যা হবে না। এর পাশাপাশি, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে বার্নপুরে দামোদরের উপরে একটি সেতু তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের বৃহৎ একটি বণিক সংগঠনের শাখা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান রোহিত খেতান জানান, তাঁরা মূলত কয়েকটি সমস্যার বিষয় জানিয়ে তা দ্রুত সমাধানের জন্য আর্জি জানাবেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শিল্পোদ্যোগীদের মূল সমস্যা, জমি। সরকার জমি অধিগ্রহণ না করায় শিল্পোদ্যোগীদের নিজেদেরই জমি কিনতে হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, জমির রেজিস্ট্রেশন ও চরিত্র বদলের সময়ে বিভাগীয় জটিলতা হচ্ছে। ফলে শিল্প স্থাপনে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই।’’ সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানানো হবে বলে জানান রোহিতবাবু। এ ছাড়া জেলায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
জেলার পর্যটন শিল্পের আরও উন্নয়নে সরকারের কাছে নানা ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব জানানো হবে বলে জানান আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের উপদেষ্টা সুব্রত দত্ত। এই সম্মেলনে ডাক পাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন শিল্পপতি অবশ্য জানান, সুযোগ পেলে তাঁরা সরকারের কাছে একটি স্থায়ী শিল্পনীতি ঘোষণা করার
প্রস্তাব দেবেন।
বিভিন্ন বণিক সংগঠনগুলির আশা, সরকার তাদের প্রস্তাবগুলি বিবেচনা করলে জেলায় শিল্প-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।