রাজ্য কতটা শিল্প-বান্ধব, ঠিক করবেন শিল্পপতিরা

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, শিল্পপতিরা যে মতামত দেবেন, শুধু তার ভিত্তিতেই সর্বভারতীয় র‌্যাঙ্কিং তৈরি হবে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৯
Share:

হলটা কী: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য (বাঁ দিকে) ও মুখ্যসচিব মলয় দে। পাশে মুকেশ অম্বানী। বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে শিল্পস্থাপনের পথে বাধা কতটা কেটেছে, তা জানাবেন শিল্পপতিরাই। এত কাল রাজ্যগুলি যে সব সংস্কারের দাবি জানাত, তা মেনে নিয়েই বিচার করত কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। গত বছর রাজ্যের দাবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল শিল্প স্থাপন করতে যাওয়া ব্যবসায়ীদের মতামতও। এ বার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, শিল্পপতিরা যে মতামত দেবেন, শুধু তার ভিত্তিতেই সর্বভারতীয় র‌্যাঙ্কিং তৈরি হবে।

Advertisement

এই সিদ্ধান্তে রাজ্য সমস্যায় পড়তে পারে বলে মনে করছেন শিল্প দফতরের কর্তাদের একাংশ। কারণ, ২০১৭-১৮ সালে প্রথমে যে র‌্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে বাংলা ‘শিল্প-বান্ধব’ হিসেবে চিহ্নিত প্রথম পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে ছিল। কিন্তু গত বছর শিল্পপতিদের মতামত নেওয়ার পরে রাজ্যের নম্বর বেশ কমে যায়। পিছিয়ে যায় র‌্যাঙ্কিং। ফলে এ বার শুধু শিল্পপতিদের মতামত নিয়ে ‌র‌্যাঙ্কিং তৈরির পরে রাজ্যের অবস্থান কোথায় দাঁড়াবে তা ভেবে চিন্তিত শিল্প দফতরের কর্তারা।

এক শীর্ষ কর্তার কথায়,‘‘আমরা আমাদের দাবি জানাব। এ বার ব্যবসায়ীদের মূল্যায়নের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। তবে যা কাজ হয়েছে এবং বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে শিল্পপতিরা যা বলেছেন, তাতে আশা করা যায়, দিল্লিকেও একই কথা বলবেন তাঁরা।’’

Advertisement

কোথায় পশ্চিমবঙ্গে

সাল র‌্যাঙ্কিং
• ২০১৫ ১১
• ২০১৬ ১৫
• ২০১৭ ১০

সূত্র: কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক।

চলতি বছর ৮০টি সংস্কার কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে এই তালিকা তৈরি করবে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। ৩১ মার্চের মধ্যে রাজ্যগুলিকে তাদের গৃহীত পদক্ষেপ দিল্লির কাছে প্রমাণ-সহ জমা দিতে বলা হয়েছে। তার পর রাজ্যের দাবি কতটা সত্যি বা বাস্তবসম্মত তা যাচাই করতে শিল্পপতিদের মতামত নেওয়া হবে। সেই মতামতই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

২০১৪-এ নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বব্যাঙ্কের পরামর্শে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা করে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ এর সর্বভারতীয় র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ শুরু হয়। ইন্সপেক্টর এবং লাইসেন্সরাজ খতম করে অনলাইনে শিল্পস্থাপনের অনুমোদন-সহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা গড়ে তোলাই ছিল এর উদ্দেশ্য। প্রতি বছর জমি, জল, বিদ্যুৎ, পরিবেশ, লাইসেন্স, শ্রম, রাস্তা ইত্যাদি বিষয়ে ছাড়পত্র দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে নানা সংস্কার কর্মসূচি ঠিক করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রক। তারা এই তালিকা তৈরি করলেও তার ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ বিশ্ব ব্যাঙ্কের তৈরি করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, গত বছর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা যখন রাজ্যে এসে শিল্পপতিদের মতামত নিয়েছিলেন, তখন সেই প্রক্রিয়ায় যোগ দেয়নি নবান্ন। শিল্প দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য যোগ না দিলেও ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়েই সর্বশেষ র‌্যাঙ্কিং তৈরি করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রক। এ বার তো পুরোটাই তাদের হাতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন