সঙ্কট কাটেনি গুলিবিদ্ধ শিশুর

বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্রের অভিযোগ, ‘‘মিথ্যে ঘটনায় বিজেপি নেতা কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মানিকচক শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫১
Share:

মালদহের নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন মানিকচকের গুলিবিদ্ধ শিশু মৃণাল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

গুলিবিদ্ধ বছর তিনেকের শিশু মৃণাল মণ্ডলের সঙ্কট এখনও কাটেনি। চিকিৎসকেরা ৭২ ঘণ্টা কাটার জন্য অপেক্ষা করছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে নাগাদ মালদহের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পুতুল মণ্ডলের ছোট ছেলে মৃণালের গায়ে গুলি লাগে। সে তখন নিজের বাড়িতেই ঘুমোচ্ছিল। রামনগর গ্রামের কয়েকজনের দাবি, গুলি চলেছে বাড়ির ভিতর থেকেই। কেউ কেউ মনে করছেন, মৃণালের পরিবারের কারও হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল, তা থেকেই কোনও ভাবে গুলি ছিটকে যায়। তবে প্রকাশ্যে সে কথা কেউই বলছেন না। পরিমলবাবুর জবাব, ‘‘বাড়িতে বন্দুক কই যে গুলি চলবে! বিজেপি দোষ ঢাকতে দায় চাপাচ্ছে।’’ তবে পুলিশের একটি অংশও মনে করছে, বাড়িতেই কেউ গুলি ছুড়েছিল। পরিমলবাবু ১৮ জনের নামে অভিযোগ করলেও পুলিশ ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি।

তৃণমূলের অবশ্য দাবি, পুতুলদেবী দলবদল করে বিজেপি থেকে শাসক দলে যোগ দিয়েছেন, সেই আক্রোশেই তাঁর বাড়িতে বিজেপির সমর্থকরা গুলি ছুড়েছিল। বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Advertisement

গঙ্গার ধারেই রামনগর গ্রাম। উল্টো দিকে ঝাড়খণ্ডের রাজমহল এলাকা। শুক্রবার গিয়ে দেখা গেল গ্রাম এক রকম পুরুষশূন্য। পঞ্চায়েত ভোটে রামনগরে বিজেপির প্রভাবই বেশি দেখা গিয়েছে। পুতুলদেবী বিজেপি টিকিটে দাঁড়িয়ে মোট ৯৯৩টির মধ্যে ৫১৭টি ভোট পেয়েছিলেন। তৃণমূলের টিঙ্কি মণ্ডল পান ২৭৮টি। বিজেপি এই পঞ্চায়েতেই ১৮টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জেতে। তৃণমূল পায় ৬টি। একটি পায় কংগ্রেস, আর একটিতে জেতেন নির্দল প্রার্থী। ফল বেরোনোর পরে কংগ্রেস ও নির্দল প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরে পুতুলদেবীও দলবদল করে তৃণমূলে যান। তাতে বিজেপি-তৃণমূলের দু’পক্ষের শক্তি সমান হয়ে যায়। টসে জিতে মঙ্গলবার বিজেপিই অবশ্য বোর্ড গঠন করে।

গ্রাম সূত্রে জানা যায়, জেতার পরে পুতুলদেবী আশ্বাস দিয়েছিলেন দলবদল করবেন না। কিন্তু তিনি সে কথা রাখেননি। পরিমলবাবুর বক্তব্য, ‘‘সেই আক্রোশেই বিজেপি আগেও আমাদের বাড়িতে হামলা করেছে। এ বারও গুলি ছুড়েছে। তাতে আমার দুধের শিশু এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।’’ তৃণমূল নেতা তথা মালদহে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের দলে যোগদান করেছিল বলেই বিজেপি পুতুলদেবীদের বাড়িতে গুলি চালিয়েছে।’’ গ্রামের বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দাবি, এলাকার তৃণমূলের কয়েকজন পুতুলদেবীকে মেনে নিতে পারছেন না বলেই এই সব কাণ্ড করছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্রের অভিযোগ, ‘‘মিথ্যে ঘটনায় বিজেপি নেতা কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন