আটাকলে ভেজাল রুখতে পরিদর্শক

রেশনের চাল ছাড়াও আটা নিয়ে অভিযোগ উঠছে ভূরি ভূরি। মূলত অভিযোগ দু’টি: ভেজাল মেশানো এবং সীমান্তের ও-পারে পাচার। দ্বিমুখী ব্যবস্থা নিয়ে এর মোকাবিলা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রথমত, আটাকলে পরিদর্শক বসানো। দ্বিতীয়ত, সীমান্ত এলাকা ছাড়া অন্যত্র রেশনে আটার বদলে গম দেওয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৬
Share:

রেশনের চাল ছাড়াও আটা নিয়ে অভিযোগ উঠছে ভূরি ভূরি। মূলত অভিযোগ দু’টি: ভেজাল মেশানো এবং সীমান্তের ও-পারে পাচার। দ্বিমুখী ব্যবস্থা নিয়ে এর মোকাবিলা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রথমত, আটাকলে পরিদর্শক বসানো। দ্বিতীয়ত, সীমান্ত এলাকা ছাড়া অন্যত্র রেশনে আটার বদলে গম দেওয়া।

Advertisement

দুই ব্যবস্থার মধ্যে প্রথমটি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয়টি আছে প্রস্তাবের আকারে। জামুড়িয়ার বিধায়ক জাহানারা খানের এক প্রশ্নকে ঘিরে শুক্রবার বিধানসভায় আটার প্রসঙ্গ ওঠে। কয়েক দিন আগেও রেশনে দেওয়া আটার মান নিয়ে সভায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তার পরে ৩৯টি জায়গা থেকে আটার নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ দিন জানান, রিপোর্ট পেলেই সেটি দেওয়া হবে বিধানসভার স্পিকারকে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গম থেকে আটা তৈরির সময়ে কোনও কারচুপি হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য রাজ্যের সব আটাকলে ইনস্পেক্টর বা পরিদর্শক বসানো হচ্ছে। তাঁরা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আটাকলে থাকবেন। আটাকল কখন চলবে আর কখন বন্ধ হবে, সেটা ঠিক হবে পরিদর্শকদের নির্দেশেই।’’ খাদ্যমন্ত্রীর আশা, এই ব্যবস্থায় আটায় ভেজাল মেশানো বন্ধ করা যাবে। যদিও বাস্তবে সেটা কতখানি সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে খাদ্য দফতরেই। মন্ত্রী জানান, রাজ্যে ১১০টি আটাকল ছিল। ২০টির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। ৯০টি আটাকলে পরিদর্শক বসানোর কাজ শুরু হবে শীঘ্রই।

Advertisement

গম পাচার ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় রেশনে শুধু আটাই দেওয়া হবে। তবে অন্যত্র ভেজাল রুখতে আটা সরবরাহ বন্ধ করে রেশনে গম দেওয়ার কথা ভাবছে খাদ্য দফতর। খাদ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর দফতর এই বিষয়ে নবান্নে প্রস্তাব পাঠাবে। চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেবে সরকার।

এর মধ্যেই চলছে চাল নিয়ে চাপান-উতোর। গত সপ্তাহে নদিয়ায় রেশনের চাল নিয়ে দলীয় বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের অভিযোগ পেয়ে তা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালায় খাদ্য দফতর। খাদ্যমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ডিস্ট্রিবিউটর, ডিলার-সহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শো-কজ করা হয়েছে তাঁদের অধিকাংশকে। বাকিদের সাসপেন্ড।’’

বর্ধমানে ডিস্ট্রিবিউটরদের একাংশ বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছিলেন, খাদ্য দফতরই রেশনে নিম্ন মানের চাল সরবরাহ করছে। সেই বিষয়ে এ দিন বিধানসভায় প্রশ্ন তোলেন এক বিরোধী বিধায়ক। জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বর্ধমানের গুদামে জালন্ধরের প্যাকেটবন্দি চাল পাওয়া গিয়েছে। তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, এ বার গুদামে চাল ঢোকা থেকে রেশনে সরবরাহ করা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে। সেই জন্য গড়া হবে বিশেষজ্ঞ পরিদর্শকদল। অধিবেশনের বাইরে খাদ্যমন্ত্রী জানান, এ দিনও সল্টলেক, বীরভূম-সহ বিভিন্ন জায়গায় চালের গুদাম এবং রেশনের দোকানে অভিযান চালানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন