বিমল গুরুং। ফাইল চিত্র।
এ যেন আর এক ফুংসুক ওয়াংড়ুর ঘটনা। ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর সেই বিজ্ঞানী রনছোরদাসের নামে পড়াশোনা করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। পাশ করে ফুংসুক চলে যান লাদাখে, আর তাঁর ডিগ্রি ব্যবহার করেন রনছোরদাস। বিমল গুরুংয়ের মেয়ে অন্নপূর্ণার আইসিএসই পরীক্ষার ফল নিয়ে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন যে তদন্ত চালায়, তাতে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে জেলাশাসক সূত্রের দাবি। প্রশাসন সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতরের সচিবের কাছে।
জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তের দাবি, গুরুংয়ের মেয়ে অন্নপূর্ণা আইসিএসই পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। তদন্তে ধরা পড়েছে, তিনি অন্যের নাম ভাঁড়িয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। সোমবার দার্জিলিঙের জেলাশাসক বলেন, ‘‘আইসিএসই-তে গুরুং-কন্যা ফেল করেন। পরে এক উত্তীর্ণ ছাত্রীর ভুয়ো সার্টিফিকেট দেখিয়ে তার নামে কার্শিয়াংয়ের স্কুলে ভর্তি হন।’’
জেলাশাসক যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন শিক্ষা দফতরের কাছে, সেখানে বলা হয়েছে: ২০০৪ সালে মাউন্ট হারমন স্কুল থেকে আইসিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষা দেন। সেই একই বছর গ্রিন লন্স স্কুল থেকে আইসিএসই পাশ করেন নেপালের পূর্ণ বাহাদুর গুরুংয়ের মেয়ে নন্দা গুরুং। জেলাশাসকের রিপোর্টে দাবি, অন্নপূর্ণা এর পরে নন্দার শংসাপত্র দেখিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। জয়সী আরও বলেন, ‘‘সব তথ্য মেলার পরে দুই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। বার কাউন্সিল ও আইসিএসই বোর্ডকে সব জানানো হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: নদিয়ায় ‘পাশে থাকা’র বার্তা পার্থ, শুভেন্দুদের
নানা মামলায় অভিযুক্ত বিমল গুরুং এখন ফেরার। তাঁর স্ত্রী আশারও হদিস নেই। গুরংয়ের ছেলেরাও বিদেশে বলে পুলিশের একটি সূত্রের সন্দেহ। অন্নপূর্ণা কোথায় আছেন, তা-ও পুলিশ-প্রশাসনের অজানা। যদিও গুরুংয়ের ঘনিষ্ঠ কয়েক জন মোর্চা নেতা একান্তে জানান, এত দিন আগের ঘটনা নিয়ে এখন তদন্ত করার অর্থ কি, সেটাও স্পষ্ট হওয়া দরকার। বিনয় তামাং, অনীত থাপার অনুগামীরা অবশ্য জালিয়াতির অভিযোগ শুনেই ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর প্রসঙ্গ টেনেছেন। বলছেন, ‘‘বাস্তবেও এমন হয় নাকি!’’