প্রতীকী ছবি।
লক্ষ লক্ষ মানুষের মত, মন্তব্য-সহ অসংখ্য তথ্য-গুজব নিয়ে তাদের কারবার। মাঝেমধ্যেই তাদের মাধ্যমে কুৎসার বন্যায় বিব্রত হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে আম-আদমি। কিন্তু তদন্তের প্রয়োজনে তথ্য জোগান দিচ্ছে না সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ‘ফেসবুক’। তাদের মর্জির সামনে নিজেদের রীতিমতো অসহায় বোধ করছেন রাজ্যের তদন্তকারীরা।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার একটি মামলায় বিষয়টি তুলে ধরেন সাইবার-মামলার বিশেষ আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুককে মামলায় ‘পার্টি’ করার বা যুক্ত করার আবেদন জানান তিনি।
গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময়েও একটি ‘পেজ’ বন্ধের বিষয়ে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিল দু’পক্ষ। এ বারের মামলাটির বিষয় কী? পুলিশি সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির বাসিন্দা এক মহিলা তাঁর স্বামী এবং অন্য এক জনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগ করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু তদন্ত না-এগোনোয় পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে নিষ্ক্রিয়তার মামলা করেন ওই মহিলা। পুলিশের রিপোর্ট তলব করে কোর্ট। বিভাসবাবু হাইকোর্টে সেই রিপোর্ট পেশ করে জানান, পুলিশ অভিযুক্তের ‘ইন্টারনেট প্রোটোকল অ্যাড্রেস’ (আইপি অ্যাড্রেস) জানার জন্য ফেসবুককে চিঠি লেখে। কিন্তু ফেসবুক তা দেয়নি। ফলে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যায়নি।
বিচারপতি জানতে চান, ‘আইপি অ্যাড্রেস’ ছাড়াই কি তদন্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেত না? সরকারি কৌঁসুলি জানান, ফেসবুকে কেউ ইচ্ছে করলে অন্য কারও নামে প্রোফাইল খুলে অপরাধ করতে পারেন। সে-ক্ষেত্রে আইপি অ্যা়ড্রেস প্রয়োজন আসল অপরাধীকে চিহ্নিত করার জন্যই। সেটি না-পেলে মূল অভিযু্ক্তের চিহ্নিতকরণ সম্ভব নয়।
ফেসবুকের অসহযোগিতার জন্য দেশের অনেক মামলারই তদম্ত আটকে আছে। সাইবার গোয়েন্দারা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুৎসা করার জন্য কয়েক বছর আগে মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুক তথ্য না-দেওয়ায় তদন্ত এগোয়নি।
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানান, ফেসবুকের মতো তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার সার্ভার এ দেশে নেই। ফলে কোনও তথ্য পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট সংস্থারই মুখ চেয়ে বসে থাকতে হয়।