সুন্দরবনে বাঁধ সারাই নিয়ে প্রতিশ্রুতি সেচমন্ত্রীর

চারি দিকে জল থই থই। কিন্তু পানীয় জল নেই। স্নানের জল তো অনেক দূরের কথা। গত পাঁচ দিন ধরে এই পরিস্থিতিতে কাটাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর, নামখানা, ক্যানিং, কাকদ্বীপ, বাসন্তীর বহু মানুষ। সরকারি ত্রাণ অমিল বলে অভিযোগ উঠছে। রবিবার ভরা কোটালে নদী বাঁধ ধসেই এই বিপত্তি। তবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতি ও বন্যার্তদের ত্রাণ বিলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৪
Share:

চারি দিকে জল থই থই। কিন্তু পানীয় জল নেই। স্নানের জল তো অনেক দূরের কথা।

Advertisement

গত পাঁচ দিন ধরে এই পরিস্থিতিতে কাটাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর, নামখানা, ক্যানিং, কাকদ্বীপ, বাসন্তীর বহু মানুষ। সরকারি ত্রাণ অমিল বলে অভিযোগ উঠছে। রবিবার ভরা কোটালে নদী বাঁধ ধসেই এই বিপত্তি। তবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতি ও বন্যার্তদের ত্রাণ বিলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

নামখানার চিনাই নদীর উপর প্রায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙেছে। মৌসুনি পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন তাঁবুতে। ঘর ভেসে যাওয়ায় তুলনামূলক উঁচু রাস্তা বা গ্রামের পাকা বাড়িগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। সাগর ব্লকের কয়েকটি জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙেছে। গোসাবারও কিছু জায়গায় একই অবস্থা। বাসন্তীতে বাঁধের অবস্থা খুব খারাপ।

Advertisement

সেচমন্ত্রী বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ বিলির জন্য জেলাশাসককে বলা হয়েছে। তা ছাড়া, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতির ব্যবস্থা করতে বাস্তুকারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” কয়েক দিনের মধ্যেই সুন্দরবন এলাকায় বাঁধের অবস্থার খতিয়ে দেখতে মন্ত্রী এলাকায় যাবেন বলে সেচ দফতর সূত্রের খবর। নামখানার বিধায়ক বঙ্কিম হালদার দাবি করেছেন, এলাকায় চাল, ডাল, চিঁড়ে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার নামখানার মৌসুনিতে নদীবাঁধ পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বেশ কিছু ত্রিপল ও শুকনো খাবার। সেগুলি বিলি করা হয়। সরকারি ত্রাণ অমিল বলে কান্তিবাবুর কাছেও অভিযোগ জানান দুর্গত মানুষ। কান্তিবাবু বলেন, “সরকারি ত্রাণ না পেয়ে ওঁরা আমাকেই ফোন করে চলেছেন। সে কারণে যতটা পেরেছি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এসেছি।”

সাগর ব্লকের মুড়িগঙ্গা ১ ও ঘোড়ামাড়া পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গ্রামে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। অভিযোগ, কোথাও ত্রাণ পৌঁছয়নি। শাসক দলের কাউকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এলাকার নলকূপগুলি ডুবেছে। পিএইচই-র জলের পরিষেবা বন্ধ। গাছপালা, মরা জীবজন্তু পচতে শুরু করেছে। সংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। দুর্গন্ধে টেঁকা দায়। বহু চাষের জমি নষ্ট হয়েছে। নোনা জল ঢুকে পুকুরের মাছ চাষের ক্ষতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১২টি ত্রাণশিবির করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন। সাগরের বিডিও পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।”

মুড়িগঙ্গা পঞ্চায়েতের প্রাণকৃষ্ণ সর্দার, নারায়ণ মণ্ডল, প্রহ্লাদ মণ্ডলরা বলেন, “বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হলেও শাসক দলের নেতা-নেত্রীরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁদের এলাকায় দেখাও যায়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন