বাধা পেরোনোতেই আনন্দ, সমাবেশে বার্তা ভাগবতের

ব্রিগেডে সভা করতে গোড়ায় অনুমতি দেয়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ছাড়পত্র যোগাড় করতে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল তাঁদের! তবে সে জন্য ওপর ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করলেও আদতে খুশিই হয়েছিলেন আরএসএস নেতারা!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৯
Share:

ব্রিগেডে সভা করতে গোড়ায় অনুমতি দেয়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ছাড়পত্র যোগাড় করতে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল তাঁদের! তবে সে জন্য ওপর ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করলেও আদতে খুশিই হয়েছিলেন আরএসএস নেতারা! কেন না তাঁরা মনে করছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার তাঁদের সভায় বাধা দেওয়ায় মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে সঙ্ঘ পরিবারের সভা এ বার আরও গুরুত্ব পেয়ে গেল! ব্রিগেডের মঞ্চে দাঁড়িয়ে শনিবার সেই বার্তা দিয়ে গেলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সমাবেশের মঞ্চ থেকে সঙ্ঘ প্রধান এ দিন বলেন, ‘‘বাধা সত্ত্বেও কঠোর পরিশ্রম করে শুদ্ধ প্রেরণা নিয়ে এগোলে সাফল্য আসে। আজকাল তো সবেতেই বাধা! বাধার মধ্যে কাজ করেই তো আনন্দ!’’

Advertisement

আরএসএস-বিজেপি তো বটেই, রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেই মনে করেছিলেন, সঙ্ঘের এ দিনের সমাবেশ থেকে বুঝি রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হবেন ভাগবত। সেই সঙ্গে বক্তৃতায় এমন দাওয়াই দেবেন, যাতে বাংলায় মেরুকরণের রাজনীতির পরিবেশ তীব্র হয়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাংলায় শাসক দলের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও সমালোচনাই এ দিন করেননি ভাগবত। এমনিতে আরএসএস কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। বরং নিজেদের সাংস্কৃতিক ও জাতীয়তাবাদী সংগঠন বলেই দাবি করেন সঙ্ঘের নেতারা। তবে বিজেপি নেতৃত্বের মতে, তৃণমূলকে প্রত্যক্ষ ভাবে আক্রমণ না করলেও, ‘বাধা’-র কথা বলে এ দিন বাংলায় শাসক দলকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন সঙ্ঘ প্রধান। এবং তার মাধ্যমে সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকদের ‘বাধা কাটিয়ে উঠতে’ আরও উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন।

প্রসঙ্গত, আদালতে আরএসএসের তরফে জানানো হয়েছিল, তাদের এ দিনের কর্মসূচিতে চার হাজারের বেশি কর্মী আনা হবে না। সেই প্রতিশ্রুতি মেনেই এ দিন ব্রিগেডে ‘ড্রিল’ এবং সভা করে তারা। তবে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এ দিন সমাবেশের সরাসরি সম্প্রচার দেখিয়েছে সঙ্ঘ। ভাগবত এ দিন বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনির মধ্য দিয়ে বলেছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে হিন্দু সমাজকে এগোনোর পথ করে নিতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন হিন্দু সমাজের ঐক্য। যা না থাকার ফলে এই সমাজ দুর্বল। বাংলাদেশ এবং ভারত— সর্বত্রই অপমানিত। ভাগবতের কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতির জন্য একে-ওকে দায়ী করার অর্থ নেই। হিন্দুদের নিজেদের সংগঠিত হতে হবে। তবেই শক্তি বাড়বে। যার শক্তি আছে, তাকে সবাই নমস্তে বলে। আর যার শক্তি নেই, তাকে যে যা খুশি করতে পারে।’’

Advertisement

আরএসএস প্রধানের বক্তব্য, সঙ্ঘ কারও বিরুদ্ধে নয়। এমনকী, সংখ্যালঘুদেরও বিরুদ্ধে নয়। সঙ্ঘের নেতা এম এস গোলওয়ালকর এক বার বলেছিলেন, এক জন মুসলিম না থাকলেও সঙ্ঘ হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ এবং দেশভক্ত করার কাজ চালাবে। কারণ, এই সংগঠন অন্য কারও বিরুদ্ধে নয়, হিন্দুদের জন্য। ভাগবতের দাবি, শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ ভারত গড়তে হলেও হিন্দুদেরই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন