তুষারকে প্রার্থী করা ‘ভুল’, ক্ষমা চাইলেন অধীর

কংগ্রেসের টিকিটে জিতে এলাকার বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টচার্য পা বাড়িয়েছেন তৃণমূলের দিকে। বৃহস্পতিবার তুষারবাবুর বিধানসভা কেন্দ্র—বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে সভা করে সে জন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৪
Share:

বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডের সভায় অধীর চৌধুরী ও আব্দুল মান্নান। ছবি: শুভ্র মিত্র।

কংগ্রেসের টিকিটে জিতে এলাকার বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টচার্য পা বাড়িয়েছেন তৃণমূলের দিকে। বৃহস্পতিবার তুষারবাবুর বিধানসভা কেন্দ্র—বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে সভা করে সে জন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বললেন, ‘‘প্রার্থী নির্বাচনে ভুল হয়েছিল। মানুষ চিনতে ভুল হয়েছিল। এমন একটি লোককে প্রার্থী করায়, আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’’

Advertisement

তুষারবাবুর বিধায়ক পদ খারিজ করার দাবি জানিয়ে আজ, শুক্রবার বিধানসভার স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান।

২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান-মঞ্চে হাজির ছিলেন তুষারকান্তি। দাবি করেছিলেন, মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে ভোট দিয়েছেন। একমাত্র তৃণমূলে থেকেই তা করা সম্ভব। এ দিন সেই সূত্র টেনে বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডের ওই সভায় অধীর বলেন, ‘‘ওঁর জন্য প্রচারে প্রায় আট কিলোমিটার হেঁটেছিলাম। নির্বাচন চলার সময় বললেন, ‘টাকা দিন’। জেতার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চাইলেন। এত দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না আমাদের। এখন আবার উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন!’’ অধীরের সংযোজন, ‘‘২১১টি আসন পেয়েও নিশ্চিত নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই লাগাতার বিরোধী দল ভাঙার খেলায় মেতেছেন। এখন মুর্শিদাবাদ থেকেও ভাঙানো হচ্ছে।’’

Advertisement

মান্নানের অভিযোগ, ‘‘তুষারবাবু কেন এমন করলেন, চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ঠিকঠাক জবাব মেলেনি।’’ তুষারবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘যা বলার, মান্নান সাহেবকে চিঠিতে বলে দিয়েছি। অধীরবাবু তাঁর মতো কথা বলেছেন। তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’

বিষ্ণুপুরের আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর দিয়ে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের এই ক্ষমা-প্রার্থনা পর্ব। সেখানে তাদের পাঁচ পুরপিতা দল বদলে তৃণমূলে গিয়েছেন। তবে রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা মনে করাচ্ছেন, ওই জেলাতেই প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া (কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার ভাই)-সহ সবংয়ের এক ঝাঁক নেতা সম্প্রতি তৃণমূলে ভিড়েছেন। কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরা তৃণমূলে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কান্দি এবং অগস্টে বেলডাঙা পুরসভা হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের। জুলাইয়ে জঙ্গিপুর পুরসভা বামেদের হাতছাড়া হওয়ার পিছনে কংগ্রেসের চার সদস্যের দল বদলানোর ভূমিকা ছিল। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের ২৯ জন সদস্য কংগ্রেস ছেড়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলে গিয়েছেন (কংগ্রেস অন্দরের খবর, আরও জনা আটেক ‘যাব-যাব’ করছেন) । তবে সেই সব দলবদলের জন্য এখনও প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা ক্ষমা চাননি।

সে কথা ধরিয়ে দিয়ে তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কটাক্ষ, ‘‘পায়ের নীচে মাটি না থাকলে লোকে অনেক কথা বলে। আর কোথায় কোথায় ওঁদের ক্ষমা চাইতে হয়, দেখুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন