বরাদ্দ ছাঁটাইয়ের অভিযোগ

আর্থিক সঙ্কটের মুখে যাদবপুর

সেই সঙ্গে গবেষণাগার, ক্লাসরুম-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়ন মার খাবে বলে আশঙ্কা করছে জুটা। পার্থপ্রতিমবাবুর অভিযোগ, বেতন ছাড়াও অন্যান্য খাতে টাকা কম দিচ্ছে রাজ্য। অথচ সরকারের নির্দেশে পড়ুয়ার সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর্থিক সমস্যার জেরে দৈনন্দিন পঠনপাঠনও বিঘ্নিত হবে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শীর্ষে আছে যাদবপুর। কিন্তু রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যের অভাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

যাদবপুর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স কমিটির বৈঠকে বাজেট সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেই রিপোর্ট বলছে: ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের বাজেটে কর্মচারীদের বেতন এবং অন্যান্য খাতে যে-খরচ হয়, তার অনেকটা বিশ্ববিদ্যালয়কেই বহন করতে হয়েছে। ওই বছর বেতন খাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ হয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। তার মধ্যে রাজ্য সরকার দিয়েছে ১৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে অস্থায়ী কর্মীদের বেতনও রয়েছে।

বেতন খাতেই সাহায্য কমানোর অভিযোগ শেষ হচ্ছে না। বেতন ছাড়াও অন্যান্য খাতেও যে-খরচ হয়, তাতেও সরকারি সাহায্য কমেছে বলে অভিযোগ। রিপোর্ট অনুযায়ী এই খাতে খরচ হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। কিন্তু সরকার দিয়েছে ১৮ কোটি।

Advertisement

সব মিলিয়ে যাদবপুরের বর্তমান পরিস্থিতিতে ওখানকার শিক্ষক সমিতি (জুটা) উদ্বিগ্ন। চলতি আর্থিক বছরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের বেতন খাতে রাজ্যে সরকার গত বছরের তুলনায় ৩৮ কোটি টাকা কম বরাদ্দ করেছে। এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। জুটার সহ-সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বুধবার বলেন, ‘‘অস্থায়ী কর্মীদের বেতন এ ভাবে বন্ধ করে দিলে সেই খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে টানা সম্ভব নয়। এর ফলে যদি অস্থায়ী শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের ছাঁটাই করতে হয়, তা হলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সান্ধ্যকালীন কোর্স এবং অন্যান্য আংশিক সময়ের কোর্স। কারণ এগুলো মূলত অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিয়েই চালানো হয়।’’

সেই সঙ্গে গবেষণাগার, ক্লাসরুম-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়ন মার খাবে বলে আশঙ্কা করছে জুটা। পার্থপ্রতিমবাবুর অভিযোগ, বেতন ছাড়াও অন্যান্য খাতে টাকা কম দিচ্ছে রাজ্য। অথচ সরকারের নির্দেশে পড়ুয়ার সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর্থিক সমস্যার জেরে দৈনন্দিন পঠনপাঠনও বিঘ্নিত হবে।

তবে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের দাবি, বেতনের ক্ষেত্রে কোনও ঘাটতি তাঁদের নেই। ‘‘রাজ্য সরকার যে-সব পদের অনুমোদন দেয় না, সেগুলিতে ক্যাজুয়াল কর্মী নিলে তাঁদের বেতন খাতে সরকার রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়কেই আর টাকা দেয় না,’’ বলছেন সুরঞ্জনবাবু। তবে বেতনের বাইরে অন্যান্য খাতের খরচ চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ফিনান্স কমিটির ওই রিপোর্ট কর্মসমিতিতে পেশ হওয়ার আগে এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন না বলে জানান উপাচার্য।

শিক্ষা শিবিরের একটি অংশের বক্তব্য, অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বারে বারেই সতর্ক করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্যাজুয়াল কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে উপাচার্যদের কাছে একাধিক বার আপত্তি জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃণমূল সরকার বলে আসছে, চুক্তিতে নিযুক্ত কর্মীদের বেতনের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement