বিজ্ঞান উৎসবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান

অনেকে বলছেন, মোদীর আমলে বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষনায় বরাদ্দ কমেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৩
Share:

ভিডিয়ো কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্বোধনী বক্তৃতা। ছবি: সংগৃহীত।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উৎসব। মঙ্গলবার কলকাতায় তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানকে পিছনে ফেলে মূলত প্রযুক্তি নিয়েই কথা হল। মৌলিক বিজ্ঞান চর্চা নিয়ে আলোচনা কার্যত হলই না। এমনকি ভিডিয়ো কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্বোধনী বক্তৃতাতেও ছিল শুধুই প্রযুক্তির জয়গান। যদিও খোদ মোদীর বক্তৃতার সময়েই প্রযুক্তি বিভ্রাটের জেরে মিনিট দুয়েক বন্ধ রইল তাঁর কথা। পরে ওই বিভ্রাটের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাঁর কথা শেষ হওয়ার কিছু পরেই সকলকে চমকে দিয়ে সভায় উঠল ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান!

Advertisement

অনেকে বলছেন, মোদীর আমলে বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষনায় বরাদ্দ কমেছে। তার বদলে স্টার্ট-আপ ব্যবসা ও প্রযুক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, বড় করে দেখানো হচ্ছে। এ দিনের অনুষ্ঠানেও সেটাই চোখে পড়ছে। সেই সঙ্গেই চোখে পড়েছে এ বারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উৎসবে গেরুয়া শিবিরের বিভিন্ন সংগঠনের যোগদান। তাদের মধ্যেই একদল উৎসাহী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলেন। যদিও শুরু হওয়া মাত্রই তা থামিয়ে দেন উদ্যোক্তারা। প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা চাই, ক্লাস সিক্স থেকে পড়ুয়ারা গবেষণাগারে যাক।

কলেজ পাশ করার সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়ার মধ্যে যেন স্মার্ট-আপ সংক্রান্ত উদ্ভাবনী ক্ষমতার বিকাশ হয়।’’ প্রধানমন্ত্রী এ দিনের অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানমনস্কতার কথা বললেও তাঁর মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য এবং দলের নেতারা বারবারই নানা ‘বিজ্ঞানমূলক’ তত্ত্ব আউরে হাসির উদ্রেক করেছেন। যার সর্বশেষ উদাহরণ, এ রাজ্যের বিজেপি সভাপতির দেশী গরুর দুধে সোনা থাকার তত্ত্ব। মোদী অবশ্য এ দিন বলেন, বিজ্ঞানের গবেষণা দু’মিনিটে নুডল বানানো নয়। তাই কোনও গবেষণা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ফল মিলবে, এমন না-ও হতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিজেপিকে ‘সাফ’ করে একুশে আমরাই ফিরব, আত্মবিশ্বাসী ঘোষণা মমতার

এই উৎসবে শুধু প্রযুক্তির উপরেই আলো পড়ছে, এমন কথা মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব আশুতোষ শর্মা। তাঁর বক্তব্য, মৌলিক গবেষণাতেও বরাদ্দ বেড়েছে, ফেলোশিপ বেড়েছে। তবে এই অনুষ্ঠান মূলত সাধারণ মানুষ ও ছোট ছোট পড়ুয়াদের বিজ্ঞানে উৎসাহিত করার জন্য। তাই মৌলিক গবেষণা থেকে প্রযুক্তিকে কিছুটা এগিয়ে রাখা হচ্ছে।

উদ্যোক্তারা জানান, এ দিন দু’টি রেকর্ড গড়েছেন তাঁরা। দু’টিই ‘গিনেস বুক’এ নাম তুলেছে। প্রায় আড়াই হাজার পড়ুয়াকে নিয়ে ক্লাস হয়েছে জ্যোতিপদার্থবিদ্যা এবং স্পেকট্রোস্কোপের। দু’টি ক্লাসেই উপস্থিত ছিলেন ইন্টার-ইউনিভার্সিটি অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও অ্যাস্ট্রোনমি (আইইউকা)-র শিক্ষকেরা। এ দিন থেকে সায়েন্স সিটিতে শুরু হয়েছে বিজ্ঞান প্রদর্শনী। অন্যান্য অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশের মন্ত্রী ও কূটনীতিকদের সঙ্গে বিশেষ আলোচনাচক্রে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। পরে তিনি বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে মেধাবীরা ভারতের বিভিন্ন গবেষণাগারে আসছেন।’’ বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে বিজ্ঞান গবেষণায় উন্নতির কথাও জানান তিনি। উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ডিআরডিও- র একটি আলোচনা চক্রও ছিল এ দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন