জুয়ার আসর ভাঙতে গিয়ে মৃত্যু এসআইয়ের

জুয়ার আসর ভাঙতে গিয়ে মারা গেলেন কোচবিহার থানার সাব ইনস্পেক্টর রঞ্জিত পাল (৫০)। দুষ্কৃতীদের হামলাতেই রঞ্জিতবাবু নিহত হয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের। কিন্তু জেলার পুলিশ সুপারের দাবি, রঞ্জিতবাবু হৃদরোগে মারা গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

জুয়ার আসর ভাঙতে গিয়ে মারা গেলেন কোচবিহার থানার সাব ইনস্পেক্টর রঞ্জিত পাল (৫০)। দুষ্কৃতীদের হামলাতেই রঞ্জিতবাবু নিহত হয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের। কিন্তু জেলার পুলিশ সুপারের দাবি, রঞ্জিতবাবু হৃদরোগে মারা গিয়েছেন। দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের মদতপুষ্ট বলে প্রশাসন তাদের আড়াল করার চেষ্টা করছে বলে দাবি বিরোধীদের।

Advertisement

কোচবিহার শহর লাগোয়া পানিশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর বাজার এলাকায় জুয়ার আসর বসেছে বলে খবর পায় পুলিশ। রঞ্জিতবাবু মঙ্গলবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ জিপ নিয়ে সেখানে পৌঁছন। ঘটনাস্থলে মোট ১১ জন পুলিশ ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জিপ থেকে তাঁদের নামতে দেখেই হামলা চালায় ওই জুয়ার আসরের কয়েক জন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুলিশকর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। রঞ্জিতবাবুকে মারা হয়েছে পাথর দিয়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে মারা যান তিনি। রঞ্জিতবাবুর বাড়ি আলিপুরদুয়ারের ভোলা ডাবরিতে।

Advertisement

তবে কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, ‘‘রঞ্জিতবাবুরা জিপ থেকে নেমে জুয়ার আসরের দিকে যাওয়ার সময় তাঁদের দিকে পাথর ছোড়া হয়েছিল। তাতে এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। রঞ্জিতবাবু সম্ভবত তখনই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।’’ এসপি-র দাবি, ‘‘রঞ্জিতবাবুর দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই।’’ পুলিশ সুপারের বক্তব্যে অবশ্য নিচুতলার পুলিশকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তাঁদের প্রশ্ন, ময়না-তদন্তের আগেই এসপি কী করে বলে দিলেন, রঞ্জিতবাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন?

জুয়ার আসর যেখানে বসেছিল সেই গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিএমের অনন্ত রায়ের কথায়, ‘‘ওই এলাকায় তৃণমূলেরই একচ্ছত্র অধিকার। যারা পুলিশের উপরে হামলা চালিয়েছে, তারা তৃণমূলেরই কর্মী বলে জানতে পেরেছি।’’ কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেন, ‘‘জুয়াড়িরা কোনও দলের হয় না। তারা দুষ্কৃতী। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’ তবে, পুলিশের দিকে যে পাথর ছোড়া হয়েছিল, তা তিনিও মেনেছেন।

বিরোধীদের দাবি, কালীপুজোকে ঘিরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ-প্রশাসন ব্যর্থ। শনিবার রাতে বীরভূমের সিউড়িতে সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়কে গাড়ি থেকে বার করে চাঁদার জন্য নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনায় প্রকৃত দোষীরা কেউই ধরা পড়েনি বলে অভিযোগ। এ বার কালীপুজোর দিন জুয়ার আসর ভাঙতে গিয়ে মারা গেলেন এক পুলিশকর্মী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন