‘খুনি’ চেনা, দাবি ভাইয়ের

অভিযোগ, তদন্তে ঢিলেমি হচ্ছে। ওই দলের সদস্যদের দাবি, প্রতি রাতে বাড়ির কাছে একটি পুকুরের বাঁধানো ঘাটে মদের আড্ডা বসে। ওই সব যুবককেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। পড়শিদেরও সে ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। যদিও পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামালপুর শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৬
Share:

আঝাপুরের বাড়ি ও আশপাশে তদন্তে সিআইডি-র দল।

গত বছর মা মারা যাওয়ায় ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান হয়নি। এ বছর ভাল করে অনুষ্ঠান করবেন বলে আগে থেকে ভাইয়ের জন্য ইলিশ কিনে রেখেছিলেন জামালপুরের আঝাপুরের মহিলা আইনজীবী মিতালী ঘোষ। তার আগে গত শনিবার রাতে খুন হন তিনি। কালীপুজোর দিন সকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়িতেই। মঙ্গলবার দিদির পারলৌকিক কাজ সেরে ভাই গৌরাঙ্গবাবু বলেন, “আমার মতো অভাগা ভাই যেন কারও না হয়। আজ দিদির হাতে ফোঁটা নেওয়ার কথা ছিল, সেখানে দিদির ঘাট-কাজ করলাম!”

Advertisement

বর্ধমান আদালতের মহিলা আইনজীবীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পুলিশ এখনও ধোঁয়াশায়। এ দিন দুপুরে সিআইডি-র একটি দল এসে ঘটনাস্থল ঘুরে সম্ভাব্য জায়গা থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। সিপিআই (এমএল)-এর একটি দলও মৃতার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, তদন্তে ঢিলেমি হচ্ছে। ওই দলের সদস্যদের দাবি, প্রতি রাতে বাড়ির কাছে একটি পুকুরের বাঁধানো ঘাটে মদের আড্ডা বসে। ওই সব যুবককেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। পড়শিদেরও সে ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। যদিও পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু ‘সন্দেহজনক’ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার সিআইডি-র ফরেন্সিক দল মিতালিদেবীর বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করবেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কোনও সূত্র এখনও পর্যন্ত মেলেনি। আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে, ফরেন্সিক দল ঘুরে যাওয়ার পরে আশা করা যায় ‘খুনি’র সন্ধান মিলবে।’’

বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, আজ, বুধ ও কাল, বৃহস্পতিবার তাঁরা আদালতে কোনও কাজ করবেন না। ওই সংগঠনের সম্পাদক সদন তা বলেন, “জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে খুনিকে গ্রেফতারের দাবি জানাব। বৃহস্পতিবার গোটা রাজ্যের আইনজীবীরা যাতে কর্মবিরতি পালন করেন, বার কাউন্সিলকে তার অনুরোধ জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

‘খুনি’ পরিচিত, দাবি করছেন গৌরাঙ্গবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “যে জায়গা থেকে গয়না খোয়া গিয়েছে, সেটা অতি পরিচিত কেউ ছাড়া সম্ভব নয়। আমরা আসছি বলে ব্যাঙ্ক থেকে দিদি টাকা তুলেছে, সেটাও বাইরের লোকের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।’’ বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পারলৌকিক কাজ চলছে। মৃতার ঘর পুলিশ ‘সিল’ করে দিয়েছে। পরিজনেদের আপাতত গ্রামেই থাকার কথা বলা হয়েছে।

মিতালিদেবীর বোন চৈতালি বসুর দাবি, “এ বার দুই বোন মিলে ভাইকে ফোঁটা দেব ভেবেছিলাম। অনুষ্ঠন হল বটে, তবে শ্রাদ্ধের।’’ গৌরাঙ্গবাবুর স্ত্রী সঙ্ঘমিত্রাদেবীও বলেন, “দিদি নিজের হাতে রান্না করতেন। ভাইয়ের জন্যে উপহার কিনে রেখেছিলেন। সব থাকল, দিদিই চলে গেলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন