মূল অভিযুক্ত আব্দুল কাহার মোল্লা ওরফে বাবুয়া।—নিজস্ব চিত্র।
জয়নগর শুটআউট-কাণ্ডে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত আব্দুল কাহার মোল্লা ওরফে বাবুয়া। দিল্লির নেহরু বিহার থেকে তাঁকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর দুই শাকরেদ আব্দুল হোসেন মিস্ত্রি এবং মনিরুদ্দিন গাজিকেও।
জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়িতে হামলা এবং তিন জনের খুনের ঘটনার এফআইআর-এ নাম ছিল বাবুয়া-সহ ওই দু’জনেরও। সিআইডি সূত্রে খবর, শুক্রবার দিল্লির পূর্ব কড়কড়ডুমা আদালতে তোলা হবে ধৃতদের। তাঁদের ট্রানজিট রিমান্ডে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হবে বলেও গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
জয়নগর-কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু মূল অভিযুক্তদের নাগাল পাচ্ছিলেন না গোয়েন্দারা। দিল্লির নেহরু বিহারে দয়ালপুর এলাকায় বাবুয়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাঁরা গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে সম্প্রতি গোপন সূত্রে খবর আসে। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্থানীয় পুলিশকে নিয়ে সেখানে হানা দেন গোয়েন্দারা। তাতেই নাগাল মেলে বাবুয়া ও তাঁর দুই শাকরেদের।
আরও পড়ুন: ‘প্রমাণহীন অভিযোগে বদলি, নষ্ট হয়েছে সিবিআইয়ের সার্বভৌমত্ব’, বিস্ফোরক অলোক বর্মা
আরও পড়ুন: বর্মা ২ কোটি, আস্থানা ৬ কোটি! বিপুল অঙ্কের ঘুষের অভিযোগ দু’জনের বিরুদ্ধেই
গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের একটি পেট্রল পাম্পে তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। সেই সময় বিধায়ক গাড়িতে ছিলেন না। তবে এলোপাথাড়ি গুলি ও বোমায় মৃত্যু হয় ওই গাড়ির চালক মনিরুদ্দিন হক মোল্লা ওরফে সেলিম খান ওরফে বাবু (৩৫) এবং তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনীর জয়নগর টাউন শাখার সভাপতি সারফুদ্দিন খানের (৩০)। মৃত্যু হয় সারফুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে আসা আমিন আলি সর্দার নামে আরও এক ব্যক্তির।
ওই ঘটনার পর বিশ্বনাথবাবু দাবি করেন, তাঁকে খুন করতেই হামলা চালানো হয়। যদিও তদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শাসকদলের অন্দরে রেষারেষির জেরেই এই হামলা। নিহত সারফুদ্দিনের অপরাধমূলক কাজকর্মের কথাও সামনে আসে। জানা যায়, এক সময় একে অপরের ঘনিষ্ঠ ছিল সারফুদ্দিন এবং গতকাল সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়া বাবুয়া। এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিরোধ বাঁধে। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে প্রায়শই গন্ডগোল লেগে থাকত।
সারফুদ্দিন খুনের ঘটনার পর থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বাবুয়াকে। মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ায় তদন্তের গতি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।