ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা।—ফাইল চিত্র
নির্দিষ্ট করে লালগড়ে শবর মৃত্যুর কথা না বললেও শুক্রবারই নেতাজি ইন্ডোরের সভায় দলের নেতা-কর্মীদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কারও ঘরে ভাত না জুটলে দু’টাকা কেজি দরে চাল দিন। কার ঘরে ভাত নেই সে খবর কি আমাকে জেনে দিতে হবে?’ ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদার উদ্দেশে মমতার বার্তা ছিল, ‘আপনি নজর দিন।’
তার পর চব্বিশ ঘন্টাও পেরোল না। শনিবার সকালেই লালগড়ের পূর্ণাপাণি গ্রামের জঙ্গলখাসে পৌঁছে গেলেন বিধায়ক তথা ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা। শবর মৃত্যু নিয়ে আলো়ড়নের পরে জঙ্গলখাসে এসেছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাসরা। দলের তরফে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে এই ঘটনার পরে সুকুমার এ দিনই প্রথম জঙ্গলখাসে এলেন।
নেত্রীর বার্তাতেই কি ছুটে আসা? ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতেই এসেছি। সকলের সঙ্গে কথাও বলেছি। কোনও সমস্যা হলে সরাসরি আমাকে জানাতে বলেছি।’’ এ দিনও তৃণমূলের দলে ছিলেন সভাধিপতি মাধবী, ব্লক সভাপতি শ্যামল। এ দিনও রান্না করা খাবার বিতরণ হয়েছে শবরপল্লিতে। শাসক দলের তরফে শীতবস্ত্রও বিতরণ করা হয়।
শনিবার লালগড়ে এসেছিল বাম এবং কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলও। বামেদের দলে ছিলেন খগেন মুর্মু, সুজিত চক্রবর্তী, প্রদীপ সাহা, শ্যামলী প্রধান, সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কেরা। কংগ্রেসের দলে ছিলেন অসিত মিত্র, সুখবিলাস বর্মা, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ। অসিতবাবু অভিযোগ করেছেন, ‘‘মা-মাটি-মানুষের সরকার শবরদের জন্য কিছু করেনি। শবরদের জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। সরকারের নজর নেই।’’ পুলিনবাবুর কথায়, ‘‘আমি পুজোর আগে এখানে এসেছিলাম। তখনই দেখেছি কী করুণ অবস্থা। মৃত্যু অনাহারেই হয়েছে। যে চাল দেওয়া হয় তার মান খুব খারাপ। মানুষ খেলে অসুস্থ হবেই।’’ মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাম, কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল।
আরও পড়ুন: প্রথম আয়াপ্পা দর্শনে ছুঁতেই হবে বাবর মসজিদ
অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার। তিনি বলেন, ‘‘মৃতদের পরিজনেরাই জানিয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে অসুখে। শবরপল্লিতে ভাতের অভাব নেই।’’