মার খেয়েও এগিয়ে যাক ঐশী, চাইছে পরিবার

রবিবার রাত থেকেই ক্ষোভ, রাগ, উৎকণ্ঠা সব মিলেমিশে রয়েছে দুর্গাপুরের ডিটিপিএস কলোনির বাড়িটায়।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৯
Share:

দুর্গাপুরের বাড়িতে ঐশীর বাবা, মা ও দিদিমা। ছবি: বিকাশ মশান

নাতনির রাজনীতিতে যোগদানে গোড়ায় মত ছিল না তাঁর। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যায় সেই মেয়ের রক্তাক্ত মুখের ছবিটা দেখার পরে চোয়াল শক্ত হয়েছে অশীতিপর শান্তি সিংহের। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের দুর্গাপুরের বাড়িতে বসে সোমবার তাঁর দিদিমা শান্তিদেবী বলেন, ‘‘ওদের লড়াই আরও দশ জনের জন্য। কত মানুষ ভাল কাজের জন্য জীবনও দিচ্ছেন। খুব চিন্তা হলেও চাইছি, ঐশীরা এগিয়ে যাক।’’

Advertisement

রবিবার রাত থেকেই ক্ষোভ, রাগ, উৎকণ্ঠা সব মিলেমিশে রয়েছে দুর্গাপুরের ডিটিপিএস কলোনির বাড়িটায়। ঐশীর মা শর্মিষ্ঠাদেবী জানান, সে দিন সন্ধ্যায় ফোনে মেয়ে জানান, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে আন্দোলন করতে যাওয়া নিয়ে তখন তাঁদের আলোচনা চলছে। তার আধ ঘণ্টা পরেই ঐশীর জখম হওয়ার খবর পেয়ে হতভম্ব হয়ে পড়েন তাঁরা। শর্মিষ্ঠাদেবীর অভিযোগ, ‘‘জেএনইউ-এর উপাচার্য আরএসএসের লোক। এত বড় ঘটনার পরেও ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু বলেননি তিনি। তাঁর পদত্যাগ চাইছি।’’ সোমবার ফোনে মেয়ের মুখে ‘ভাল আছি’ শুনে খানিকটা আশ্বস্ত হয়েছেন তিনি। এ দিন ব্যারাকপুরের এক হাসপাতালে চোখের চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন ঐশীর বাবা দেবাশিস ঘোষ। ডিভিসি-র রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মী দেবাশিসবাবু দীর্ঘদিন সিটুর সঙ্গে যুক্ত। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঐশীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে দিল্লির দৌলতরাম কলেজে পড়ার সময়ে। রবিবারের ঘটনা নিয়ে দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘শুনেছি, এবিভিপি এটা করেছে। উদ্বেগে আছি। আজ আমার মেয়ে, কাল আমি, পরশু আপনি— প্রতিবাদ না হলে আক্রান্তের সংখ্যাটা কিন্তু বাড়তেই থাকবে।’’

দেবাশিসবাবুদের পড়শি তথা সিটু প্রভাবিত ‘ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়নে’র নেতা নেপাল দে দাবি করেন, ‘‘ক্যাম্পাসে হামলা বর্বরদের কাজ। উপাচার্য পদত্যাগ করুন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।’’ ছাত্রীদের হস্টেলে রক্ষী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে হামলা হল, প্রশ্ন আর এক প্রতিবেশী দিলীপ চট্টোপাধ্যায়ের। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়তেন ঐশী। সেখানকার অধ্যক্ষা পাপিয়া মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘এই আক্রমণ অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের মিছিলে লাঠিচার্জ, অস্বস্তিতে রাজ্য

জেলার মেয়ের উপরে হামলার ঘটনাকে অবশ্য আমল দিতে নারাজ পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি এবং এবিভিপি নেতৃত্ব। এবিভিপি-র জেলা সহ-সম্পাদক শুভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘যা খবর পেয়েছি, ওখানে বামপন্থী পড়ুয়াদের হামলায় আমাদেরই ২৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রশাসন তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করুক।’’

আরও পড়ুন: বন্‌ধে অফিস না-করলে কোপ বেতনে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন