বর্ষার মরসুমে রাস্তায় জমে থাকা জলের কারণে গত বছর প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল হাওড়া শাখার সমস্ত ট্রেন চলাচল। জমা জলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল হাওড়া শহরও। গত বছরের সে ই বেহাল অবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার বর্ষার আগেই হাওড়া পুরসভার সঙ্গে পূর্ব রেল যৌথ ভাবে নিকাশি ব্যবস্থা পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, শুক্রবার হাওড়ার ডিআরএম-এর সঙ্গে পুরসভার কর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী সোমবার, ২৭ মার্চ রেল ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা যৌথ ভাবে এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।
সম্প্রতি হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে হাওড়ার ডিআরএমকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টিকিয়াপাড়া স্টেশনের কাছে রানিঝিল-সহ বহু নিকাশি নালা ও নয়ানজলির সংস্কারের কোনও কাজ না হওয়ায় হাওড়ার দাশনগর, রামরাজাতলা, সাঁতরাগাছি-সহ উত্তর হাওড়া ও বালি এলাকা মিলিয়ে প্রায় ১২টি ওয়ার্ড প্রতি বর্ষাতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। তাই অবিলম্বে ওই নিকাশি নালা ও জলাধারগুলির সংস্কার করে ফেলা প্রয়োজন। পুরসভার কর্তারা অভিযোগ করেছেন, এর আগেও রেলকে বারবার এ কথা জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি। এ বার সতর্ক না হলে বর্ষায় আবার শহরের রাস্তাঘাট থেকে রেল পরিষেবা— সবই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, পুর কমিশনারের পক্ষ থেকে এই চিঠি দেওয়ার পরেই এ দিন ডিআরএম তাঁর অফিসে পুর প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডেকে পাঠান। বৈঠকে পুরসভার পক্ষ থেকে মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরার নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন কয়েক জন কাউন্সিলর ও পুর ইঞ্জিনিয়ার।
এ ব্যাপারে হাওড়ার ডিআরএম আর বদ্রিনারায়ণ বলেন, ‘‘কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে, তা দেখার জন্যই যৌথ ভাবে পরিদর্শন করা হবে। শহরের কোথায় কোথায় নিকাশির সংস্কারের কাজ করা প্রয়োজন বা কোথায় পাম্পিং স্টেশন দরকার, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
এ দিনের বৈঠকের পরে বিভাসবাবু জানিয়েছেন, পূর্ব রেলের টিকিয়াপাড়া থেকে উত্তর হাওড়া ও বালি পর্যন্ত এলাকাকে চারটি ভাগে ভাগ করে রেলকে জানানো হয়েছে, ঠিক কোন জায়গায় রেলের নিকাশির বেহাল দশার জন্য শহর প্রতি বছর বারংবার জলমগ্ন হচ্ছে। বিভাসবাবুর দাবি, ‘‘রেলের গাফিলতির জন্যই যে বারবার জল জমে, তা হাওড়ার ডিআরএম কার্যত মেনে নিয়েছেন। এর পরেই তিনি যৌথ ভাবে এলাকা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’