ফের দামামা জোড়া ঘূর্ণাবর্তের

উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে মৌসম ভবনের আবহবিদেরা রবিবার জানান, একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে ওড়িশা-বাংলা উপকূল লাগোয়া উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কাছে। অন্ধ্র উপকূল সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপরে অবস্থান করছে অন্য ঘূর্ণাবর্তটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

বর্ষা-স্নান: বাড়ি ফেরা ভিজে ভিজে। সোমবার ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

আবার আবার সেই কামান নয়, মেঘগর্জন! নিম্নচাপের ধাক্কার রেশ এখনও কাটেনি। ফের বঙ্গোপসাগরে হাজির জো়ড়া ঘূর্ণাবর্ত! ভরা বর্ষায় দক্ষিণবঙ্গে ফের জোরালো বর্ষণ হবে কি না, সেটা নির্ভর করছে তাদের মতিগতির উপরেই। বর্ষণ কতটা জোরদার হবে, তার আভাস না-মিললেও হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবেই।

Advertisement

উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে মৌসম ভবনের আবহবিদেরা রবিবার জানান, একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে ওড়িশা-বাংলা উপকূল লাগোয়া উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কাছে। অন্ধ্র উপকূল সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপরে অবস্থান করছে অন্য ঘূর্ণাবর্তটি।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, ওই দুই ঘূর্ণাবর্ত কী চেহারা নেবে বা বর্ষার উপরে তারা কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটা আজ, সোমবার স্পষ্ট হতে পারে। উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে মৌসুমি অক্ষরেখার একটি অংশ গয়া, পুরুলিয়া, দিঘা হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ওই অক্ষরেখারই অন্য অংশ উত্তরবঙ্গ হয়ে চলে গিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতে। ‘‘এ বারের ঘূর্ণাবর্ত তেমন জোরালো না-হলেও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আগামী কয়েক দিন হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। জোরালো বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গে,’’ বলেন গণেশবাবু।

Advertisement

এক নিম্নচাপ কাটতেই আরও একটির আশঙ্কা, জানাচ্ছেন আমাদের প্রতিবেদক :

এ দিনের উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদদের কেউ কেউ মনে করছেন, বঙ্গোপসাগরে এ বারের দু’টি ঘূর্ণাবর্ত পরস্পরের সঙ্গে মিশে একটি ঘূর্ণাবর্তের চেহারাও নিতে পারে। তার পরে শক্তি বাড়িয়ে এবং নিম্নচাপের চেহারা নিয়ে সে যদি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ে, সে-ক্ষেত্রে জোরালো ব়ৃষ্টির আশঙ্কা থাকছেই।

জোড়া ঘূর্ণাবর্তের হাল-হকিকত কেমন, জানাচ্ছেন আমাদের প্রতিবেদক :

এক আবহবিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা, সাধারণ ভাবে ঘূর্ণাবর্ত যত ক্ষণ সাগরের উপরে অবস্থান করে, তত ক্ষণই সে জলীয় বাষ্প শুষে শক্তি বাড়াতে থাকে। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও হয়। বর্ষার মরসুমে স্থলভূমির পরিমণ্ডলেও জলীয় বাষ্পের আধিক্য থাকে। সেই জন্য সাগর ছেড়ে চলে এলেও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্তের শক্তি বৃদ্ধি সম্ভব। সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গে ধুন্ধুমার বৃষ্টি ঝরানো নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছিল স্থলভূমিতে পৌঁছনোর পরেই। এবং তার সেই বর্ধিত শক্তিই অতি ভারী বৃষ্টি ঝরিয়েছে ঝাড়খণ্ডে।

মৌসম ভবন এ বার স্বাভাবিক বর্ষার আভাস দিয়েছিল। তারা জানাচ্ছে, সাম্প্রতিক নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি-ঘাটতি পূরণ হয়ে গিয়েছে। ৩০ জুলাই পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে দুই শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃতির এই মেজাজ বজায় থাকলে আগামী দিনেও বর্ষা স্বাভাবিকই থাকবে। দুর্যোগের আশঙ্কা সত্ত্বেও দেশের পক্ষে এটা স্বস্তির খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন