সাহায্য: তিন নিহতের স্ত্রীর পাশে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
জয়নগরে দুষ্কৃতী-হামলায় নিহত তৃণমূল নেতা সারফুদ্দিন মোল্লা-সহ তিন জনের স্ত্রীকে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের পৌষমেলা মাঠে জনসভায় হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে আসার আগে তিনি ওই তিন মহিলার সঙ্গে কথা বলেন। পরে মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘আমি খুন-খারাপি একদম পছন্দ করি না। যারা খুন করেছেন, তাঁরা জেনেবুঝেই করেছেন। যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁদের আমি ধিক্কার জানাই। আমি ওই তিন জনের হাতে সরকারি চতুর্থ শ্রেণির চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একজনকে স্বরাষ্ট্র দফতর ও দু’জনকে স্বাস্থ্য দফতরের চাকরি দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও বলেন, ‘‘যদি কোনও মানুষ খুন হন, সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। এখানে ওই নিহতদের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। আমি জেলাশাসককে বলে দিয়েছি, ওদের পড়াশোনার বিষয়ে সব দেখাশোনা করতে।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বক্তৃতায় নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের নাম করেননি। তবে তিন জনকে খুনের ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল বলে অভিযোগ উঠেছিল। সপ্তাহ দু’য়েক আগে জয়নগরের কল্যাণপুরে একটি পেট্রল পাম্পে সারফুদ্দিন মোল্লা-সহ তিন জনকে বোমা-গুলি চালিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। স্থানীয় তৃণমূলের দুই কর্মী জড়িত বলে দাবি তদন্তকারীদের।
সারফুদ্দিনের বিরুদ্ধে খুন ও ছিনতাইয়ের গোটা আটেক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। জুন মাসে ছাড়া জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি জয়নগর টাউন জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি হন।
সারফুদ্দিন খানের স্ত্রী রুকসানা বলেন, ‘‘উনি দুষ্কৃতীর গুলিতে শহিদ হয়েছেন। আমার ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। ওদের মুখে অন্ন জোগানোর একটা ব্যবস্থা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ নিহত আমিন আলি সর্দার ও মইনুল হক মোল্লার পরিবারও মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আমিনের স্ত্রী নাসিমা বলেন, ‘‘উনি তো চলে গিয়েছেন। এখন সন্তান ও পরিবার চালানোর জন্য চাকরি করতে হবে। আমার সংসার ভেসে যাচ্ছিল। মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’ মইনুলের স্ত্রী রুমাইয়ার কথায়, ‘‘আমাদের সাংসারিক অবস্থার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে। আমার সন্তান ও পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’’