সবং মামলা

আইও-র ভূমিকায় খুশি নন, বোঝালেন বিচারক

গোড়া থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সবংয়ে ছাত্র খুনের মামলা পুলিশ ইচ্ছেমতো সাজাচ্ছে। এ বার খোদ বিচারকই সবং মামলার তদন্তকারী অফিসারকে সতর্ক করে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর যে ভূমিকা পালন করার কথা, তিনি তা করছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:০৩
Share:

গোড়া থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সবংয়ে ছাত্র খুনের মামলা পুলিশ ইচ্ছেমতো সাজাচ্ছে। এ বার খোদ বিচারকই সবং মামলার তদন্তকারী অফিসারকে সতর্ক করে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর যে ভূমিকা পালন করার কথা, তিনি তা করছেন না।

Advertisement

সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র পরিষদ সদস্য কৃষ্ণপ্রসাদ জানাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় গত শুক্রবার পুলিশ গ্রেফতার করে একই সংগঠনের সদস্য সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিন দিন পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষে মঙ্গলবার ফের সৌমেনকে মেদিনীপুরের সিজেএম মঞ্জুশ্রী মণ্ডলের এজলাসে হাজির করানো হয়। শুনানি চলাকালীনই সিজেএম মামলার তদন্তকারী অফিসার (আইও) বিশ্বজিত্‌ মণ্ডলের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এখানে আইও-র নামই ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে। ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের নাম সামনে চলে আসছে।’’ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকার পরেও না-আসায় গ্রেফতার করা হয় সৌমেনকে। সেই একই কারণে সিপি-র আরও নয় কর্মীর বিরুদ্ধে এ দিন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘সিপি কর্মীদের থানায় ডেকে অত্যাচার করা হচ্ছে। আতঙ্কে ছেলেরা পুলিশের কাছে যেতে চাইছে না। আর তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা বেরোচ্ছে।’’ আর বিচারকের মন্তব্য প্রসঙ্গে মানসবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুলিশ গোড়া থেকেই মামলাটি সাজাচ্ছে। এ বার আদালতে বিষয়টি সামনে আসছে।’’

এ দিন ঠিক কোন পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকারী অফিসারের প্রতি ওই মন্তব্য করেন বিচারক? শুনানি চলাকালীন অভিযুক্তের আইনজীবী অলোক মণ্ডল বলেন, ‘‘খড়্গপুরের এসডিপিও আমার মক্কেলের (সৌমেন) বাড়িতে গিয়ে ওঁর বাবা-মাকে ভুল বোঝাচ্ছেন। এসডিপিও যদি তদন্তের জন্য যেতেন, তা হলে তো তদন্তকারী অফিসারকে নিয়ে যেতেন। তদন্তকারী অফিসার কি ঠুঁটো জগন্নাথ?’’ অভিযুক্ত পক্ষের আর এক আইনজীবী হরিসাধন ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘সৌমেনকে জেলার পুলিশ সুপার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। রাজসাক্ষী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ-ও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সৌমেনকে মেদিনীপুর কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হবে। পড়াশোনার ভার পুলিশ নেবে।’’ অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের মুখে বার বার এসডিপিও, পুলিশ সুপারের কথা শোনার পরই সিজেএম তদন্তকারী অফিসার বিশ্বজিৎবাবুর উদ্দেশে ওই মন্তব্য করেন। বিশ্বজিৎবাবু তার জবাব দেননি। মেদিনীপুরের আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকতের কথায়, ‘‘যে কোনও মামলায় তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। মামলার প্রতিটি পদক্ষেপ তাঁর উপস্থিতিতে হওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে যে তা হচ্ছে না, আদালত সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছে।’’

Advertisement

জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভিডিও রেকর্ডিং করা হচ্ছে কিনা, তদন্তকারী অফিসারের কাছে তা-ও জানতে চান বিচারক। বিশ্বজিৎবাবু জানান, রেকর্ডিং করা হচ্ছে না। তখন সিজেএমের মন্তব্য, ‘‘কেন করা হচ্ছে না? এ বার থেকে করবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement