কদরেরও বিয়ে হয় শিমুলিয়ায়, বললেন মা

আগে তিনি জানিয়েছিলেন, শিমুলিয়ার মাদ্রাসা থেকে তাঁর তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এ বার জানালেন, এক মাত্র ছেলের কদর গাজির বৌও সেখানকার ছাত্রী। আগে তিনি দাবি করেছিলেন, তিন জামাইয়ের কাউকে তিনি চেনেন না। এ বার দাবি করলেন, কদরের বউ খালিদা এক বার বাড়িতে এলেও তার নাম ছাড়া আর কিছু তাঁর জানা নেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৫৯
Share:

শিমুলিয়ার মাদ্রাসায় কুকুর নিয়ে তল্লাশিতে এনএসজি।

আগে তিনি জানিয়েছিলেন, শিমুলিয়ার মাদ্রাসা থেকে তাঁর তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এ বার জানালেন, এক মাত্র ছেলের কদর গাজির বৌও সেখানকার ছাত্রী।

Advertisement

আগে তিনি দাবি করেছিলেন, তিন জামাইয়ের কাউকে তিনি চেনেন না। এ বার দাবি করলেন, কদরের বউ খালিদা এক বার বাড়িতে এলেও তার নাম ছাড়া আর কিছু তাঁর জানা নেই।

বীরভূমের কীর্ণাহারের কাছে নিমড়ায় কদরের বাড়িতে গিয়ে তার মা শরিফা বিবিকে জেরা করেন এনআইএ-র চার অফিসার। কদর আপাতত ফেরার। যে তিন জামাইকে কখনও দেখেননি বলে শরিফা বিবির দাবি, তাদের এক জন খাগড়াগড় কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কওসর। মঙ্গলকোটের ওই মাদ্রাসায় কদরের ছোট বোন লক্ষ্মী ওরফে রুম্পা ওরফে জিন্নাতুরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল বলে সিআইডি আগেই জেনেছে।

Advertisement

এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ নানুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এনআইএ কদরের মাঠপাড়ার বাড়িতে যায়। মিনিট পনেরোর জেরায় শরিফা বিবি বলেন, “শিমুলিয়ার মাদ্রাসাতেই কদরের বিয়ে হয়েছিল। মাস চারেক আগে কয়েক দিনের জন্য কদরের বউ খালিদা এসেছিল। তার বাড়ি কোথায়, জানি না।” বিয়ের পর থেকে তিন মেয়ে কোথায়, তা-ও জানা নেই বলে তিনি দাবি করেন। পাড়াপড়শিদের অনেকেই অবশ্য গোয়েন্দাদের জেরায় অন্য কথা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, তিন মেয়ে-জামাই মাঝে-মধ্যেই ওই বাড়িতে আসত। খালিদাকেও তারা কয়েক বার আসতে দেখেছে।


মাদ্রাসার নানা জিনিস খুঁটিয়ে পরীক্ষা তদন্তকারীদের।

ইতিমধ্যে বর্ধমানের আউশগ্রাম থেকে কদরের এক আত্মীয়কে আটক করেছে এনআইএ। মাসুম শেখ নামে স্থানীয় জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের ওই যুবক আউশগ্রাম থানা এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেন। তাঁকে বর্ধমান থানায় এনে জেরা করা হচ্ছে। তাঁর বাড়ি থেকে একটি নম্বরহীন মোটরবাইক মিলেছে। যে নম্বরহীন মোটরবাইক খাগড়াগড়ের বাড়িটির সামনে দেখা যেত, এটি সেটিই কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। বর্ধমানেরই বাবুরবাগে যে কওসরকে বাড়ি খুঁজে দিয়েছিল সেই কাশেম মোল্লা এবং বাড়ির মালিক আব্দুর রেজ্জাককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ দিন সকালে বাবুরবাগের ওই বাড়িটিতে ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু কাগজ, ডায়েরি, টুথব্রাশ উদ্ধার করে এনআইএ। ডায়েরি থেকে কিছু ফোন নম্বর মিলেছে। টুথব্রাশগুলি ডিএনএ পরীক্ষার কাজে লাগানো হবে। বাড়ির একতলায় মেসে থাকা ছাত্রদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন অফিসারেরা। এনআইএ-র আর একটি দল পূর্বস্থলীর খড়দত্তপাড়ায় গিয়ে অন্যতম সন্দেহভাজন আবুল কালামের শ্বশুরবাড়িতে যায়। কালামের শ্বশুর লাল মহম্মদ শেখ বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী আসমা বিবির সঙ্গে অনেক ক্ষণ কথাবার্তা বলেন গোয়েন্দারা। ওই বাড়ি থেকেও কিছু ফোন নম্বর মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।

বিকেলে শিমুলিয়ার মাদ্রাসা-পরিচালক ইউসুফ শেখের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। ইউসুফ ফেরার। পাশেই তাদের আর একটি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সেই বাড়ি তৈরি নিয়ে পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ। সন্তোষজনক জবাব না মেলায় ইউসুফের দুই ভাই নজরুল শেখ ও বানি ইসরাইলকে আটক করে মঙ্গলকোট থানায় নিয়ে যায়। মঙ্গলকোটের নিগনে ইউসুফ যে নতুন মাদ্রাসা গড়ছিল বলে সন্দেহ, সেই নির্মীয়মাণ বাড়িটিও পরে দেখতে যায় এনএসজি এবং এনআইএ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ইউসুফের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এমন এক মহম্মদ সফিকের নামও এ দিন জানা গিয়েছে।

বীরভূমে নিমড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এনআইএ কীর্ণাহারের কাজি মার্কেট এলাকায় সুকুর শেখের বাড়িতে। তাঁর ছেলে আমজাদ শেখ ওরফে কাজল বেপাত্তা। ঈদের পর থেকে তার মোবাইল বন্ধ। পরে লাভপুরে আমজাদের শ্বশুরবাড়িতও যান অফিসারেরা। তার শ্বশুর-শাশুড়ি ইমামমুদ্দিন ও নাজেরা বিবিকে দফায়-দফায় জেরা করা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে আবার ২৫ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত পাঁচ-ছ’মাস ধরে তাঁরা ওই এলাকায় বিভিন্ন কাজ করলেও কারও কাছেই পরিচয়পত্র ছিল না।

ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন