মঞ্চে কৈলাস। নিজস্ব চিত্র।
নেচে নেচে কীর্তন গেয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করলেন এ রাজ্যে তিনি কীর্তনের বিশ্ববিদ্যালয় চান। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও তিনি দরবার করবেন।
এর মধ্যে বিজেপির ‘হিন্দুত্ব’ রাজনীতির অভিনব প্রকাশ দেখছেন বিরোধীরা। আর কীর্তন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘোষণা শুনতে ভাল হলেও আসলে অন্তঃসারশূন্য।
বিজেপি সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এ দিন জয়নগরে সভা করতে যাওয়ার কথা ছিল কৈলাসের। যেখানে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। সেখানে না গিয়ে এ দিন দুপুরে শহিদ মিনারে ‘সারা ভারত কীর্তন, বাউল ও ভক্তিগীতি কল্যাণ ট্রাস্ট’ নামক একটি সংগঠনের সভায় আচমকাই গিয়ে হাজির হন কৈলাস। মঞ্চে নাচতে নাচতে কীর্তনও গেয়ে শোনান। এরপরেই তাঁর ঘোষণা, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত কীর্তন শিল্পীরা যাতে পেনশন পান তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। রাজ্যে একটি কীর্তন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রস্তাবও দেব।’’
যা নিয়ে তৃণমূলের মহা সচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে টাকা নিয়ে আগে করে দেখাক। বিজয়বর্গীয় এখনও জানেনই না এ রাজ্যে ক’টা জেলা।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ভোটের আগে হঠাৎ এই চৈতন্য হল কেন? যদি করতেই হত, তা হলে আরও আগে বেনারসে করলেই তো পারতেন!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘এ সব পাড়ার মস্তানদের নিয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভাল।’’
কীর্তন শিল্পী ও গবেষক সুমন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘শুধু কীর্তনের বিশ্ববিদ্যালয়? শুনতে তো ভালই লাগে। কিন্তু কীর্তনের তো অনেক ভাগ। সে সব উনি জানেন তো?’’ এ দিন জয়নগর ও কৃষ্ণনগরে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও সভা’ করেন স্মৃতি ইরানি। তাঁর এ দিনের বক্তৃতায় দুর্গাপুজোর বিসর্জন, সরস্বতী পুজো, দাঙ্গার প্রসঙ্গও এসেছে। যা শুনে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, মালদহে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ যে ‘সাম্প্রদায়িক’ রাজনীতির সুর বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন, স্মৃতিও বাজলেন সেই স্বরেই।