গাড়িতে ওঠার মুখে পাকড়াও চ্যানেল-মালিক

অফিসের এক কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সাদা গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। তিনি গাড়িতে ওঠার আগেই সাত-আট জন যুবক ওই ব্যক্তিকে প্রায় টেনেহিঁচড়ে অন্য একটি গাড়িতে তুলে নিলেন। পথচারীদের হতভম্ব করে দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে দিলেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কৌস্তুভ রায়। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র।

অফিসের এক কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সাদা গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। তিনি গাড়িতে ওঠার আগেই সাত-আট জন যুবক ওই ব্যক্তিকে প্রায় টেনেহিঁচড়ে অন্য একটি গাড়িতে তুলে নিলেন। পথচারীদের হতভম্ব করে দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে দিলেন তাঁরা।

Advertisement

শুক্রবার বিকেলের জনাকীর্ণ এসপ্লানেড চত্বরে হিন্দি ছবির কায়দায় এটা কোনও অপহরণের ঘটনা কি না, তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল জল্পনা। অচিরেই জানা গেল, অপহরণ নয়। গভর্নমেন্ট প্লেস (ইস্ট) থেকে এ ভাবেই গ্রেফতার করা হয়েছে কলকাতার একটি বেসরকরি টিভি চ্যানেলের মালিক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক কৌস্তুভ রায়কে। গ্রেফতারের পরেই তাঁকে হাজির করানো হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে। আদালতে সরকারি আইনজীবী জানান, দিল্লির একটি আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশে কৌস্তুভকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা। তাই আদালত যেন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়।

ওই ব্যবসায়ীর আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত ও অনিল শর্মা সরকারি আইনজীবীর বিরোধিতা করে বলেন, ‘‘গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও কীসের ভিত্তিতে সেই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, সরকারি আইনজীবী তা বলতে পারছেন না। এই অবস্থায় কৌস্তুভকে জামিন দেওয়া হোক।’’ বিচারক সঞ্জয়রঞ্জন পাল জামিনের আর্জি খারিজ করে কৌস্তুভকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দিল্লির সাকেত আদালতে তোলার নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুলিশি সূত্রের খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ফিনান্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (আইএফসিআই) থেকে জাল নথি পেশ করে ১৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা শোধ না-করার অভিযোগ উঠেছে কৌস্তুভের বিরুদ্ধে। ঋণ শোধ না-করায় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা।

ওই অভিযোগেই ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল কৌস্তুভের ব্যবসার অংশীদার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ শিবাজী পাঁজাকে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ফেরার পথে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল অভিবাসন দফতর। এখন জামিনে রয়েছেন শিবাজী।

পুলিশ জানায়, কৌস্তুভের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় চার মাস আগে। মে মাসে দিল্লি পুলিশের একটি দল তাঁকে গ্রেফতার করতে তাঁর পার্ক স্ট্রিটের অফিসে হানা দেয়। সেই সময় অফিসের মহিলা কর্মীরা গ্রেফতারে বাধা দেন বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে পার্ক স্ট্রিট থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগও দায়ের করেন তাঁরা।

তার পরে দিল্লির সাকেত আদালতের দ্বারস্থ হয় সেখানকার পুলিশ। তদন্তকারীদের আবেদনের ভিত্তিতে সাকেত আদালত কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে নির্দেশ দেয়, কৌস্তুভকে গ্রেফতার করতে হবে। কলকাতা পুলিশ সাকেত আদালতকে জানায়, দিল্লির আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করছেন কৌস্তুভ। কলকাতা পুলিশ সাকেত আদালতের কাছে সময় চায়। লালবাজার সূত্রের খবর, ১ সেপ্টেম্বর সাকেত আদালত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন