কন্যাশ্রীর ‘মডেল’ কাবেরী

সমাজের সব শ্রেণির মেয়েদের কাছে প্রশাসন বার্তা দিতে চায়— আর্তিক অনটন কোনও বাধা নয়। দরকার শুধু অদম্য ইচ্ছা। সেই বার্তা ছড়াতে রাজ্য জুড়ে টাঙানো হবে ফ্লেকস, পোস্টার। গত শনিবার কলকাতায় গিয়ে ফোটো তুলিয়ে বাড়ি ফিরেছেন কাবেরী।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০৮:০০
Share:

কাবেরী মাল। নিজস্ব চিত্র

বাবার ছোট একটা মিষ্টির দোকান। তার আয়েই চলে চলে সংসার। সে সব প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে সাফল্যের শিখরে পৌঁছলেন বীরভূমের দুবরাজপুরের কাবেরী মাল। নিজের প্রতিভার জোরে বীরভূম থেকে কন্যাশ্ৰী প্রকল্পে ‘বাংলার মুখ’ হয়েছেন তিনি। ইচ্ছাশক্তি আর আত্মবিশ্বাস থাকলে কত দূর এগোনো যায়, তা দেখিয়েছেন কাবেরী। তাই রাজ্যের কন্যাশ্ৰী প্রকল্পে সেরা ১৪ জনের অন্যতম রোল মডেল নির্বাচিত হয়েছেন।

Advertisement

এ বারেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলেজের আঙিনায় পা রেখেছেন কাবেরী। ১৭ বছর ৮ মাস বয়সে ক্যারাটের ‘কিউকুশিন’ শৈলীর ব্রাউন (কিউ) বেল্টের অধিকারী হন তিনি। পরের ধাপই ব্ল্যাক বেল্ট। ক্যারেটেতে ব্লক ও জেলার সেরা হওয়ার পাশাপাশি রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অন্তত ৯টি পুরস্কার তার ঝুলিতে। তার মধ্যে রয়েছে পুণেতে আয়োজিত জাতীয় স্তরের একটি ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব সতেরো বালিকা বিভাগে সেরার পুরস্কার। কলকাতায় রাজ্য স্তরের একটি প্রতিযোগিতাতেও সেরা হয়েছিলেন তিনি।

জেলার কন্যাশ্রী প্রাপকদের মধ্যেই কারেবীর সাফল্য নজর কেড়েছিল জেলা প্রশাসনের। বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিভাবান কন্যাশ্ৰীদের তালিকা প্রশাসনের শীর্ষ মহলে পাঠানো হয়েছিল। বীরভূম পাঠায় কাবেরীর নাম। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নানা ক্ষেত্রের এক জন করে বেছে নেওয়া হয়েছে। সব দিক বিচার করে ১৪ জনের তালিকায় নাম জুড়েছে কাবেরীর। রাজ্যের এমন ১৪ জন ‘কন্যাশ্ৰী’ প্রাপককে বেছে তাঁদের ছবি ও কাহিনি নিয়ে বই প্রকাশিত হবে। সমাজের সব শ্রেণির মেয়েদের কাছে প্রশাসন বার্তা দিতে চায়— আর্তিক অনটন কোনও বাধা নয়। দরকার শুধু অদম্য ইচ্ছা। সেই বার্তা ছড়াতে রাজ্য জুড়ে টাঙানো হবে ফ্লেকস, পোস্টার। গত শনিবার কলকাতায় গিয়ে ফোটো তুলিয়ে বাড়ি ফিরেছেন কাবেরী।

Advertisement

মেয়ের সাফল্যে খুশি গৌতম মাল, মা তুলসীদেবী। তাঁরা বলেন, ‘‘ক্লাস সেভেন থেকে ক্যারেটে শেখে মেয়ে। প্রথম থেকেই ক্যারাটে নিয়ে খুব যত্নবান ছিল। ও যে ১৪ জন কন্যাশ্রীর তালিকায় আসতে পারবে ভাবিনি।’’ খুশি কাবেরীর যমজ বোন কৃষ্ণাও। তিনি-ও ক্যারাটে শেখেন। আর কাবেরী বলছেন, ‘‘আত্মরক্ষার জন্য ক্যারাটে শিখতে শুরু করেছিলাম। এখন দারুণ লাগে, আত্মবিশ্বাসও অনেক বেড়েছে।’’

বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘কন্যাশ্ৰীদের নিয়ে নানা কাজ হচ্ছে। রাজ্যের সেরা ১৪ কন্যাশ্রী প্রাপকের তালিকায় জেলার এক ছাত্রী থাকায় আমরা গর্বিত। নারী শক্তিবিকাশ ও ছাত্রীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও ভাল কাজ যাতে জেলায় হয়, ভবিষ্যতে সেই চেষ্টা থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন