Cyclone Amphan

আমপানের ভয়ঙ্কর স্মৃতি মাথায় নিয়ে তৈরি কলকাতা পুরসভা, নেতৃত্বে গৃহবন্দি ফিরহাদ

আমপানের ভয়ঙ্কর স্মৃতি মাথায় নিয়েই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় তৈরি হচ্ছে কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ ১৫:১৬
Share:

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় তৈরি হচ্ছে কলকাতা পুরসভা।

আমপানের (প্রকৃত উচ্চারণে 'উমপুন') ভয়ঙ্কর স্মৃতি মাথায় নিয়েই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় তৈরি হচ্ছে কলকাতা পুরসভা। আর তার নেতৃত্বে রয়েছেন গৃহবন্দি পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। শনিবার ভার্চূয়াল বৈঠক করে প্রশাসক বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে পুরসভার শীর্ষ আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই নির্দেশ পেয়েই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। আমপানের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণে রেখেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলার পরিকাঠামো তৈরির দিকেও। সোমবার থেকে প্রতিটি বরোতে বৈঠক করে কন্ট্রোল রুম গঠন করা হবে। বৈঠকে থাকবেন বরোগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যরা। কাশীপুর বেলগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষের দায়িত্ব ১ ও ৩ নম্বর বরোর। তিনি বলেছেন, ‘‘ঝড় আসার ২৪ ঘণ্টা আগে কন্ট্রোল রুম চালু করতে হবে। তাই বৈঠক করে ঝড়ের আগেই বরোগুলিতে কী রকম প্রস্তুতি রয়েছে, তা দেখে নেওয়ার পাশাপাশি, কোথাও কোনও খামতি রয়েছে কিনা তা দেখে নেওযা হবে।’’ পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তারক সিনহা থাকছেন ১৩ ও ১৬ নম্বর বরোর দায়িত্বে। ২টি বরোতে পৃথক বৈঠক করার পাশাপাশি, পাম্পিং স্টেশনগুলি কেমন অবস্থায় রয়েছে, তা জানতে সেখানে পরিদর্শনে যাবেন তিনি। সোমবার জিনজিরা, বেহালা ফ্লাইং ক্লাব ও বেগোরখাল এলাকার পাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন তারক। রবিবার ধাপা, বালিগঞ্জ, টালা বাজার পাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করেছেন তিনি।

Advertisement

৩ নম্বর বরো সামলাবেন স্বপন সমাদ্দার। বরো ৪ আমিরুদ্দিন ববি, বরো ৫ ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়, ৬ নম্বর বরো মনজর ইকবাল, ৭ নম্বর বরো দেবাশিস কুমার, ৮ নম্বর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, বরো ৯ সামলাবেন রাম প্যারে রাম, ১০ নম্বর বরো রতন দে, ১১ এবং ১২ নম্বর বরো দেবব্রত মজুমদারের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। ১৪ নম্বর বরোর দায়িত্বে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বরো ১৫-র দায়িত্বে থাকবেন শামসুজ্জামান আনসারি। ঝড়ের পরে যাতে দ্রুত শহরের পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যায় সেই মর্মে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ। রাস্তায় গাছ পরিষ্কার করা এবং যাতে দ্রুত কাটা ডালপালা সরিয়ে ফেলা যায়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই রাস্তার গর্তগুলি আগে বুজিয়ে ফেলতে হবে। তবে সব কাজই পুরসভাকে করতে হবে কোভিড বিধি মেনে। ঘূর্ণিঝড় কমলেই যাতে সাফাইকর্মীরা রাত থেকেই রাস্তায় নেমে পড়েন সেই বিষয়েও প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ল্যাডার, ডাম্পার নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য বরো অফিসগুলিতেই সব কিছু মজুত করা হয়েছে।

কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে সিইএসসির আধিকারিকরা থাকবেন বলে জানানো হয়েছে। কোনও বাতিস্তম্ভ বা ফিডার বক্স থেকে যাতে তার বেরিয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করবে সিইএসসি। সিইএসসি প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে নিজেদের টিম রাখবে। এক একটি বরোতে সমন্বয় আধিকারিক থাকবেন। সিইএসসি ও কলকাতা পুরসভা যৌথ ভাবে পরিদর্শন করবে বলেও জানানো হয়েছে। শহরের পাম্পিং স্টেশনগুলিতে বৈদ্যুতিক পরিষেবা যাতে ঠিক থাকে, তা নিয়ে এদিন সিইএসসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ওয়ার্ড স্তরে সব কর্মীদের সক্রিয় রাখা হচ্ছে। সবকটি বাতিস্তম্ভ যাতে ঠিকমতো থাকে তা নজরে রাখতে হবে। কোনওটির অবস্থা খারাপ থাকলে প্ল্যাকার্ড লাগাতে হবে। বিপজ্জনক বাড়িগুলোর সামনে ব্যানার লাগাতে হবে। সেখান থেকে সোমবারের মধ্যে বাসিন্দাদের সরিয়ে আনার কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। পাম্পগুলিকে আগে থেকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। জমে থাকা জল সরাতে পোর্টেবল পাম্প তৈরি রাখতে হবে। কেইআইআইপি আধিকারিকদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেখানে কাজ করছেন, সেখানে জল জমলে যাতে দ্রুত নিষ্কাশন করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতি বার জল জমে এমন এলাকাগুলিতে বিশেষ নজর রাখতে হবে নিকাশি বিভাগের কর্মীদের। জল পাম্প করে খালে এবং গঙ্গায় দ্রুত ফেলতে হবে। জোয়ারের সময় নজরে রাখতে হবে। প্রবল বর্ষণের ফলে শহরে যে জল জমবেই, তা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ফ্লাড শেল্টারগুলিকে পরিষ্কার রাখার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে সর্বস্তরের কর্মীদের জন্য। পাশাপাশি ত্রিপল, ওষুধ ও চিকিৎসার সব ব্যবস্থা রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement