যোগদিবস পালনে নির্দেশ আচার্যেরও, ক্ষুব্ধ সরকার

পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগদিবস পালনের জন্য আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সরাসরি নির্দেশ দেওয়ায় রাজ্য সরকার বেজায় ক্ষুব্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০৪:৩১
Share:

আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গত কয়েক বছরের মতো এ বারেও ২১ জুন অর্থাৎ আজ, বৃহস্পতিবার সব বিশ্ববিদ্যালয়কে যোগদিবস পালনের নির্দেশ দিয়েছে। তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগদিবস পালনের জন্য আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সরাসরি নির্দেশ দেওয়ায় রাজ্য সরকার বেজায় ক্ষুব্ধ।

Advertisement

এই টানাপড়েনের মধ্যেই আজ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদিবস পালন করা হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের যুক্তি, রাষ্ট্রপুঞ্জ ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগদিবস ঘোষণা করেছে। এবং যোগচর্চা শরীর-স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভাল।

রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণার উল্লেখ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, শারীরশিক্ষা বিভাগ এবং ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম (এনএসএস)-এর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যোগদিবস পালন করা হবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও এনএসএসের পক্ষ থেকে গত কয়েক বছরের মতো যোগদিবস পালন করা হবে বলে জানান সহ-উপাচার্য (অর্থ) মীনাক্ষী রায়। যোগদিবস পালন করা হবে সিদো-কানহু বিশ্ববিদ্যালয়েও। তবে বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরী জানান, পরীক্ষা চলছে। তাঁরা সেই সব পরীক্ষা নিয়েই ব্যস্ত আছেন। তাই যোগদিবস পালন করতে পারছেন না।

Advertisement

যোগদিবস পালনের যুক্তি হিসেবে রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণার কথাই বলছেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অধ্যক্ষ ডমিনিক স্যাভিও। তিনি জানান, তাঁর কলেজের পাঠ্যক্রমে যোগ আছে। যোগ শিক্ষকও রয়েছেন। এ বার তাঁদের পরিকল্পনা, শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, এমনকি অভিভাবকদের জন্য সপ্তাহে দু’দিন যোগ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। যোগদিবস পালন করছে যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজও। অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় জানান, তাঁর কলেজে যোগ কমিটি রয়েছে। প্রতি শনিবার সেখানে যোগ শিবির হয়। পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা সেই শিবিরে যোগাভ্যাস করেন। ‘‘যোগে খারাপটা কী? যোগ করলে শরীর, স্বাস্থ্য, মন— সবই ভাল থাকে,’’ বলছেন পঙ্কজবাবু।

পড়ুয়াদের জন্য গরমের ছুটি বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ স্কুলেই আজ ছেলেমেয়েদের আসার সম্ভাবনা কম। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গরমের বাড়তি ছুটি চলছে। তাই এ-সবের প্ৰশ্ন ওঠে না।’’ একই কথা বলেন রামমোহন মিশনের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস। যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘যোগদিবস পালন করা হবে। কারণ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।’’

শ্রী শিক্ষায়তন স্কুলের তরফে ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যোগ এখানে নিয়মিতই হয়। তাই বৃহস্পতিবারেও হবে। কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে বলে আলাদা ভাবে কিছু হচ্ছে না।’’ ওই স্কুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ শোনানোর ঘটনাকে ঘিরে গত বছর প্রবল বিতর্ক হয়েছিল। সে-বার টাউন হলে ফি-বৃদ্ধি নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্কুলে সেই ভাষণ শোনানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

তৃণমূলকর্মী, যোগ-শিক্ষক তুষার শীল এবং তাঁর ছাত্রছাত্রীরা আজ সকাল সাড়ে ৭টায় মৌলালি যুবকেন্দ্রে যোগ-কৌশল প্রদর্শন করবেন। এক-একটি যোগ-পদ্ধতি যে নির্দিষ্ট রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে, তা বোঝানোর চেষ্টা হবে সেখানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন