কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল হাওড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর মল্লিকা রায়চৌধুরীর তৈরি তথ্যচিত্র ‘মা’। ২৫ মিনিটের ছবির বিষয়বস্তু, মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে মাতৃপ্রতিম হয়ে কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে মেয়েদের উন্নতি ঘটাচ্ছেন। বুধবার শিশির মঞ্চে ছবিটি দেখানোর সময়ই দর্শকদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন, এমন একটি প্রচার-ছবি উৎসবে ঠাঁই পেল কী ভাবে? বৃহস্পতিবার শর্ট ও ডকুমেন্টারি ছবির বাছাই-কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের বক্তব্য, এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু করার নেই।
বাছাই কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, এক মাসের মধ্যে প্রায় ৬০০টি ছবি দেখতে হয় তাঁদের। তার পর তাঁরা আলাদা আলাদা ভাবে জানিয়ে দেন, কোন ছবি দেখানো যেতে পারে। কিন্তু সেই অনুমোদন মানা হবে কিনা, তা পুরোপুরি উৎসব কর্তৃপক্ষের উপরেই নির্ভর করছে। শর্ট ও ডকুমেন্টারি ছবি বাছাই-কমিটির চেয়ারম্যান সুপ্রিয় সেনের কথায়, ‘‘আমরা আমাদের বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী ছবি বাছাই করে দিয়েছি।’’
ছবি বাছার এই পদ্ধতি শুধু কলকাতা নয়, চলে প্রায় সব ফেস্টিভ্যালে। কান, বার্লিনেও বাছাই-কমিটির অনুমোদনের পর ফেস্টিভ্যাল কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তারা যে কোনও ছবি ঢোকাতে পারে, যে কোনও ছবি বাদ দিতে পারে। কিন্তু কলকাতায় ফেস্টিভ্যাল কমিটির হস্তক্ষেপ তুলনায় বেশি বলে অভিযোগ বাছাই-কমিটির কিছু সদস্যের। ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চেয়ারপার্সন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা ছোট ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে আমার কানে এমন কিছু আসেনি।’’ কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, কলকাতা ফেস্টিভ্যালে ভাল শর্ট ও ডকুমেন্টারি পাওয়া যায় না। কারণ, উৎসব কর্তৃপক্ষ সব সময় আনকোরা ছবি চান। তাঁর প্রশ্ন, ইউ টিউব আর শর্ট ফিল্মের রমরমার এই যুগে কোন তরুণ পরিচালক তিরুবনন্তপুরম, বেঙ্গালুরু ছেড়ে এখানে ছবি দেবেন? পুরস্কারের অর্থমূল্য অবশ্য বেড়েছে। আগামী শনিবার সেরা শর্ট ফিল্ম পাবে ৫ লক্ষ টাকা ও সেরা তথ্যচিত্র ৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু তরুণ পরিচালকেরা শুধু টাকার অঙ্ক নয়, আরও অনেক কিছুই দেখে নিতে চান, বলছেন ওই কমিটি সদস্য।
গত বছরও মল্লিকা রায়চৌধুরীর ছবি ‘কন্যাশ্রী সম্মান’ দেখানো হয়েছিল উৎসবে। এ বারের বিতর্ক নিয়ে তাঁর মতামত জানতে এ দিন বারবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটসঅ্যাপের।