Kisan Morcha

কৃষিভিত্তি বাড়াতে নির্দেশ কিসান মোর্চার

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বামেরা যখন রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে, তাদের কৃষকসভা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তৃণমূলের ক্ষেত্রেও সিঙ্গুরের মতো কৃষি আন্দোলনের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

লাটাগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৭
Share:

বার্তা দেওয়া হল রাজ্যের নেতাদের। প্রতীকী ছবি।

প্রতিটি গ্রামই শুধু নয়, কিসান মোর্চার নেতাদের যেতে হবে পাড়ায়-পাড়ায়, বুথে-বুথেও। প্রতিটি বুথে কৃষক সংগঠনের কমিটি গঠনের চেষ্টাও করতে হবে। বুধবার বিজেপির কৃষক সংগঠন কিসান মোর্চার সম্মেলনে এই বার্তাই দেওয়া হল রাজ্যের নেতাদের। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি দলীয় নেতৃত্ব কার্যত মেনে নিচ্ছেন যে, রাজ্যে কৃষক সংগঠনের শিকড় এখনও ততটা গভীরে পৌঁছয়নি।

Advertisement

সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শম্ভু কুমার বলেন, “নেতাদের প্রতিটি গ্রামে যেতে বলা হয়েছে। সংগঠন তৈরিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু রাজ্যে কিসান মোর্চার সংগঠনের দুর্বলতা নিয়ে শম্ভুর দাবি, ‘‘দুর্বলতার বিষয় নয়। মানুষের কাছে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বামেরা যখন রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে, তাদের কৃষকসভা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তৃণমূলের ক্ষেত্রেও সিঙ্গুরের মতো কৃষি আন্দোলনের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু রাজ্যে বিজেপির চোখে পড়ার মতো কৃষক আন্দোলন তেমন কিছু নেই।

Advertisement

লাটাগুড়ির একটি বিলাসবহুল রিসর্টে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বিজেপির কিসান মোর্চার পূর্বাঞ্চলীয় প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং আন্দামান থেকে কিসান মোর্চার সাংগঠনিক ‘পূর্ব ক্ষেত্রের’ প্রায় শ’তিনেক প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও হাজির ছিলেন। সূত্রের দাবি, কৃষি ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা এ রাজ্যে দলের কৃষক সংগঠন শক্তিশালী না হলে, পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শম্ভু কুমার তখন বুথে বুথে সংগঠন তৈরি করার নির্দেশ দেন।

সুকান্ত বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের অনেকটাই কৃষিজীবীদের উপরে নির্ভরশীল। আমাদের কৃষক সংগঠনকে সে ভিত্তিতে শক্তিশালী করতে হবে। তথ্য জানার অধিকারে আবেদন করে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১২২ জন কৃষক তৃণমূলের জমানায় আত্মহত্যা করেছেন।” যদিও তথ্য জানার অধিকারে পাওয়া তথ্য পরে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া হবে বলে জানানো হলেও, তা মেলেনি।

বিজেপির এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে তৃণমূল অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে বিজেপি কৃষকদের যে উৎপাত করেছে, তা রাজ্য সহ দেশবাসী দেখেছে। এ বার গ্রামে গ্রামে বিজেপির কৃষক নেতারা গেলে গ্রামের কৃষক খেতমজুররা ওদের তাড়া করবে।’’ রাজ্যের প্রাক্তন কৃষি বিপণনমন্ত্রী (বর্তমানে ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী) বিপ্লব মিত্রের মন্তব্য, ‘‘আমাদের রাজ্যে চাষের জন্য আগাম টাকা, বিমার টাকা, কৃষক মারা গেলে পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের মতো সুবিধা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন। বিজেপি বুথে গিয়ে চাষিদের কাছে কোন মুখে কথা বলবে!’’

আজ, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের অন্যতম কৃষি প্রতিমন্ত্রী কৈলাস চৌধুরীর আসার কথা রয়েছে। তবে দুপুরের পরে, বিশেষ পর্যায়ের আলোচনার মূল বক্তা সুনীল বনসল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন