উড়ান বাড়াতে ডেনমার্কের পথে কলকাতা

কয়েক মাস ধরে কিছু বিমানসংস্থা কলকাতা থেকে উড়ান বাড়াতে চায়। কিন্তু, যে সময়ে তারা উড়ানগুলি চালাতে চাইছে সেই সময়ে তাদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতায় যাতে আরও বিমান ওঠানামা করতে পারে, সে জন্য ডেনমার্কের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বুধবার কলকাতায় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র জানিয়েছেন, ডেনমার্কের কোপেনহাগেন থেকে ওই বিশেষজ্ঞ দল সোমবার শহরে আসছে। এখন কলকাতার প্রধান রানওয়ে থেকে ঘণ্টায় ৩৫টি বিমান ওঠানামা করতে পারে। গুরুপ্রসাদবাবুর কথায়, ‘‘আমরা সেটা বাড়িয়ে ৪০ পর্যন্ত করতে পারি। কিন্তু, তার থেকেও বেশি বাড়াতে গেলে ওই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ প্রয়োজন।’’

কয়েক মাস ধরে কিছু বিমানসংস্থা কলকাতা থেকে উড়ান বাড়াতে চায়। কিন্তু, যে সময়ে তারা উড়ানগুলি চালাতে চাইছে সেই সময়ে তাদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত জানিয়েছেন, রানওয়ের ধারণ ক্ষমতা ৩০ থেকে ৩৫ হওয়ার ফলে আগামী গ্রীষ্মে কিছু উড়ান বাড়ানো যাবে। কিন্তু, ভবিষ্যতে ধারণ ক্ষমতা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

Advertisement

কলকাতায় সমান্তরাল দু’টি রানওয়ে থাকলেও এক সঙ্গে দু’টিকে ব্যবহার করা যায় না। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের নিয়ম অনুযায়ী, সমান্তরাল দুই রানওয়ে দিয়ে একসঙ্গে বিমান ওঠানামা করতে গেলে দু’টি রানওয়ের মাঝে কমপক্ষে ৭৬০ মিটার ব্যবধান থাকতে হবে। কলকাতায় সেটি মাত্র ২৩২ মিটার।

গুরুপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘আমি কোপেনহাগেনে দেখেছি, সেখানেও সমান্তরাল রানওয়ে রয়েছে। এবং একই সমস্যার কারণে সেখানে এক সঙ্গে দু’টি রানওয়ে ব্যবহার করা যায় না। তা সত্ত্বেও কোপেনহাগেন থেকে ঘণ্টায় অনেক বেশি বিমান ওঠানামা করে।’’ কোন জাদুতে তারা সেটা করছে, তা জানতেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সে দেশের বিশেষজ্ঞদের। প্রয়োজনে কলকাতার একটি দলও কোপেনহাগেনে গিয়ে বিষয়টি দেখে আসবেন বলে জানান চেয়ারম্যান।

উড়ান সংখ্যার পাশাপাশি কলকাতায় যাত্রী সংখ্যাও বাড়ছে। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, কলকাতার নতুন টার্মিনাল দিয়ে এপ্রিল থেকে মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরে ২ কোটি ৬০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারেন। ডিসেম্বরের মধ্যেই ১ কোটি ৮০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেছেন। ফলে, আগামী দিনে বিকল্প বিমানবন্দর তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে। গুরুপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘সপ্তাহ খানেক আগে মুখ্যসচিব মলয় দে-র সঙ্গে এ নিয়ে আমার বৈঠক হয়েছে। রাজ্য জানিয়েছে, আমাদের চাহিদা মতো এই বিমানবন্দর থেকে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরত্বে প্রায় ১২০০ একর জমির খোঁজ চলছে।’’ চেয়ারম্যানের মতে, যে হারে যাত্রী ও বিমানসংস্থা বাড়ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যেই বিকল্প বিমানবন্দরটি তৈরি করে ফেলতে হবে। অন্য রাজ্যের উদাহরণ টেনে গুরুপ্রসাদ জানিয়েছেন, যে হারে ভারতে বিমান পরিবহনের বৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে প্রতিটি বড় শহরেই একটি করে বিকল্প বিমানবন্দর প্রয়োজন হবে। দিল্লি ও মুম্বইয়ে ইতিমধ্যেই বিকল্প বিমানবন্দরের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছে। চেন্নাই সরকারও একটি জমি দেখে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। সেখানে বিমানবন্দর তৈরি সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখতে অফিসারেরা যাবেন। এমনকী ভুবনেশ্বরেও বিকল্প বিমানবন্দর তৈরির জন্য আর্জি জানানো হয়েছে।

বাকি রয়েছে কলকাতা। গুরুপ্রসাদবাবুর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার বিকল্প হিসেবে দুর্গাপুরের কথা বলেছিল। দুর্গাপুর খুব ভালো বিমানবন্দর। কিন্তু, সেটা কলকাতা থেকে এত দূরে যে সেখানে বিকল্প বিমানবন্দর করা যাবে না।’’ বেহালার প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, কলকাতায় যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, বিকল্প হিসেবে অনেক বড় বিমানবন্দরের কথা ভাবা হচ্ছে। বেহালা খুবই ছোট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন