প্রতীকী ছবি।
গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রশ্নে প্রথমে রাজ্য অনুমতি দেয়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে বিজেপির যুব মোর্চার মোটরবাইক র্যালি হচ্ছে কাঁথি থেকে কোচবিহার পর্যন্ত। এই অনুমতি দিতে গিয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানান, সভা, সমিতি, মিছিল করার অধিকার সকলের রয়েছে। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, সভা, সমিতি, মিছিল নিয়ে বৈষম্য করা যায় না।
১১ থেকে ১৮ জানুয়ারি এই যাত্রার সময়ে র্যালির আয়োজক এবং অংশগ্রহণকারীদের রাজ্য পুলিশের ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ প্রয়োজনে ওই আইন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলেও আদালত জানিয়েছে। আদালত যুব মোর্চাকে অনুমতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই বুধবার বাবুঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীদের জন্য আয়োজন পরিদর্শনে যান। যুব মোর্চার ওই মিছিলের জন্য গঙ্গাসাগর যাত্রীদের কোনও অসুবিধা হলে বিজেপি দায়ী হবে বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। তিনি বিজেপির নাম না করে বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলায় ৩০ লক্ষ লোকের ভিড় হয়। আমরা তো ওই সময়ে অন্য কিছু করি না। গঙ্গাসাগর মেলার সময়ে কোনও ধর্মীয় যাত্রা হতে পারে না। গঙ্গাসাগর মেলায় কিছু ঘটলে আপনারা দায়ী থাকবেন। আমাদের দায়ী করবেন না।’’
যদি কোনও গোলমাল হয়, তার দায় আবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আগাম চাপিয়েছেন পুলিশের উপর। পানিহাটিতে এ দিন দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আদালত কান ধরে সরকারকে ওঠবোস করিয়ে অনুমতি দিয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা মতোই যাত্রা হবে।’’
যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার জানান, আজ, বৃহস্পতিবার কাঁথি থেকে শুরু হচ্ছে প্রতিরোধ সঙ্কল্প যাত্রা। নিদেন পক্ষে ২০০টি মোটরবাইক সবসময় ওই যাত্রায় থাকবে। তবে এক জেলা থেকে আর এক জেলায় যাওয়ার পথে সেই বাইকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিবেকানন্দর জন্মদিন উপলক্ষে যুব মোর্চার এই সঙ্কল্প যাত্রায় একদিকে যেমন বিবেকানন্দর জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে ট্যাবলো থাকবে। থাকবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির নানা ঘটনাও। দেবজিতের বক্তব্য, ‘‘যুব মোর্চা এত বড় র্যালি আগে কখনও করেনি। তাই আমাদের র্যালি বানচাল করার চক্রান্ত ছিল প্রশাসনের।’’
বিজেপির অনুষ্ঠানে অনুমতি না দেওয়ার ঘটনা প্রথম নয়। এর আগে ধর্মতলায় ২০১৪ সালে অমিত শাহর সভার জন্য অনুমতি দেয়নি রাজ্য। পরে আদালতের হস্তক্ষেপেই সভা করেন অমিত। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবতের ব্রিগেডের সভার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। সভার অনুমতি পেতে আদালতে যেতে হয়েছিল আরএসএস-কে। গত সপ্তাহে আন্দুল রাজবাড়ির ময়দানে আরএসএসের অনুষ্ঠানের অনুমতি এসেছিল কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রক্ষিতেই। যুব মোর্চার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল।
কেন সরকার আরএসএস-বিজেপির অনুষ্ঠানে অনুমতি দিচ্ছে না, তা ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপির নামে যে গন্ডগোল করা হচ্ছে, তা মানবেন না। ওরা দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে। ওদের কথা শুনবেন না। ওরা বলছে রথ বার করবে। কী রথ বার করবে!’’