ইদের ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি নিয়ে টুইট করে বিতর্ক বাড়ালেন রাজস্থানের এক আমলা।
ইদের ছুটি নিয়ে ‘ভুয়ো’ সরকারি বিজ্ঞপ্তি-বিভ্রান্তির মাঝেই আরও বিতর্ক বাড়ালেন রাজস্থানের এক শীর্ষ আমলা। সেই ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি নিয়েই টুইট করেছেন রাজস্থানের অতিরিক্ত মু্খ্য সচিব পদমর্যাদার আইএএস অফিসার সঞ্জয় দীক্ষিত। টুইটে ওই ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি নিয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন,“পশ্চিম বাংলাদেশের ইসলামিক রাস্ট্র সবচেয়ে লম্বা ইদের ছুটি দিয়েছে। পাঁচ দিনের সবেতন ছুটি। আস্তিক এবং নাস্তিক সবার।”
সঞ্জয় দীক্ষিতের এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। কারণ সঞ্জয় যে সময় এই টুইট করেছেন, তার অন্তত ১২ ঘণ্টা আগে কলকাতা পুলিশ এই পোস্টটিকে ভুয়ো বলে ঘোষণা করে দিয়েছে তাদের টুইটার হ্যান্ডেলে। তার পরেও কী ভাবে এক জন শীর্ষ আমলা সরকারি পদে থেকে এই রকম দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো মন্তব্য করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
শুক্রবার রাত থেকেই স্যোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায় একটি পোস্ট। খোদ রাজ্য অর্থ দফতরের লেটারহেডে ইদের ছুটি সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা ছড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর ওই নির্দেশিকা ঘিরেই রাজ্য সরকারি কর্মচারি মহলে তুমুল বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
আরও পড়ুন:
ইদের ছুটির বিজ্ঞপ্তিও ভুয়ো! কর্মচারিদের মধ্যে তুমুল বিভ্রান্তি
অর্ডার দিলেই হাজির ওঁরা, পাশে এ বার সিটু
অর্থ (অডিট) দফতরের একটি নির্দেশিকার আকারে তৈরি সেটি। ওই নির্দেশিকায় লেখা আছে, ১২ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে ইদ হওয়ার সম্ভাবনা। তাই পূর্ব নির্ধারিত ১৬ জুন ইদের দিনের সঙ্গে যুক্ত করে ১২ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রশাসনিক পরিভাষায় যে ভাবে রাজ্যপালের কথা উল্লেখ করে সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়, সে ভাবেই বিজ্ঞপ্তিটির বয়ান তৈরি করা হয়েছে। নির্দেশিকাটিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোগোও ব্যবহার করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত সচিবের নামের উপরে একটি সইও রয়েছে নির্দেশিকায়।
বিজ্ঞপ্তিটি ‘ভুয়ো’ জানিয়ে রবিবার টুইট করেছে কলকাতা পুলিশ। এ দিন এ এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা জানান, বিজ্ঞপ্তিটি ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’। দোষীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, যাঁরা এই ভুয়ো বিজ্ঞপ্তিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এডিজি।
দীক্ষিতের এই পোস্টের উত্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের এক মুখপাত্র গর্গ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, দীক্ষিত তার সরকারি পদ ব্যবহার করে ভুয়ো সংবাদ ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের কাছে গর্গ অবিলম্বে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।
এর আগেও ঠিক একই ভাবে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে এই আমলার বিরুদ্ধে। মুম্বই পুলিশ তাঁকে সাবধানও করেছিল ভুয়ো খবর প্রচার করার জন্য। তার পরও আদৌ কোনও পরিবর্তন হয়নি রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সচিব এই আইএএসের। রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “আমরা কিছু লোককে চিহ্নিত করেছি। প্রয়োজন হলে এই আমলার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।”