নয়াচরে পলি ফেলবে বন্দর

এক-বছর-কম এক যুগে পরিকল্পনা হয়েছে বিস্তর। কিন্তু এক ঝুড়ি মাটিও পড়েনি। নয়াচরকে এ বার পলি ফেলার কাজে ব্যবহার করতে চান কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩১
Share:

এক-বছর-কম এক যুগে পরিকল্পনা হয়েছে বিস্তর। কিন্তু এক ঝুড়ি মাটিও পড়েনি। নয়াচরকে এ বার পলি ফেলার কাজে ব্যবহার করতে চান কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জাহাজ চলাচল মসৃণ করতে নদীর পলি তুলে সাগরে ফেলার বদলে তা নয়াচরে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নয়াচর এখন যাদের হাতে, অনাবাসী ব্যবসায়ী প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের মালিকানাধীন সেই নিউ কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (এনকেআইডি) সংস্থা বন্দরের এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে বলে বন্দর-কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর।

বন্দর জানাচ্ছে, কলকাতা-হলদিয়া বন্দরে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য হুগলি নদীর জেলিংহাম পয়েন্টে বছরভর ড্রেজিং করতে হয়। কিন্তু জায়গা না-থাকায় সেই পলি ফেলে আসতে হয় বঙ্গোপসাগরে। পলি ফেলতে ২০০৬ সালে হলদিয়া বন্দরের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে নন্দীগ্রামে ২৫০০ একর জমি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু নন্দীগ্রাম আন্দোলনের জেরে সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। নন্দীগ্রামে রাসায়নিক শিল্পতালুক নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করে ২০০৮-এ বাম সরকার নয়াচরে তা স্থানান্তরিত করে। প্রস্তাব ছিল, মোট লগ্নি হবে এক লক্ষ কোটি টাকা। সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকায় নয়াচরে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। নামমাত্র টাকায় নয়াচরের সাড়ে ১৩ হাজার একর জমি দেওয়া হয় এনকেআইডি-কে। কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের জেরে সেই শিল্পতালুক নির্মাণের কাজ এগোয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: মিরিক থেকেই বদলের ডাক পাহাড়ে

২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাসায়নিক শিল্পতালুক প্রকল্পটিই বাতিল করে দেন। ঠিক হয়, নয়াচর দ্বীপের একটি অংশে গড়া হবে বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাকি অংশে ইকো-ট্যুরিজম বা পরিবেশ-পর্যটনের ব্যবস্থা হবে। কিন্তু সেই সব প্রকল্পও দিনের আলো দেখেনি। এনকেআইডি-র দাবি, জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলার জেরেই নয়াচরের প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলি আটকে গিয়েছে। নয়াচরে বিদ্যুৎকেন্দ্র বা শিল্প স্থাপনের ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে পরিবেশ আদালত। যেখানে এক লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির স্বপ্ন দেখা হচ্ছিল, সেই নয়াচরে চলছে চিংড়ি-ভেটকির চাষ।

‘‘নয়াচরে এখন কার্যত কিছুই হচ্ছে না। তাই সেখানে পলি ফেলতে দেওয়ার জন্য আমরা এনকেআইডি-র অনুমতি চেয়েছি। দ্বীপে পলি জমা হলে সেটি উঁচু হবে, আবার কম সময়ে অনেক বেশি পলিও তোলা যাবে,’’ বলেন বন্দরের এক মুখপাত্র।

বন্দর সম্প্রতি এই প্রস্তাব পেশ করে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছেও। রাজ্য সরকার জানায়, জমি এখন এনকেআইডি-র হাতে। তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী তারাই। পলি ফেলার জমি দিতে আপত্তি নেই এনকেআইডি-র। ‘‘আমরা বন্দরের প্রস্তাবে রাজি,’’ বলেছেন ওই সংস্থার এক মুখপাত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন