বুধবার দুর্ঘটনার পর আটক হওয়া সেই বাস। নিজস্ব চিত্র
শুধু বুধবারই নয়, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ ও লেক ভিউ রোডের মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেপরোয়া ভাবে দু’টি গাড়ি এবং মোটরবাইক আরোহীকে ধাক্কা মারায় অভিযুক্ত বেসরকারি বাসটি গত এক বছরে মোট ৭২৪ বার ট্র্যাফিক আইন অমান্য করেছে।
ট্র্যাফিক পুলিশ ৪০৭ বার ওই বাসটির বিরুদ্ধে সাইটেশনের মামলা (কোনও গাড়ি ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে পুলিশ গাড়ির নম্বর দেখে ব্যবস্থা নেয়) করেছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে জরিমানা না মেটানোয় আদালতের কাছে ওই বেসরকারি বাসের মালিকের বকেয়া রয়েছে আরও ৩১৬টি মামলা। পুলিশ জানিয়েছে, বেআইনি ভাবে পার্কিংয়ের অভিযোগও রয়েছে বাসটির বিরুদ্ধে। ১৮সি রুটের বেসরকারি বাসটিকে বুধবারই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে চালক বিশ্বনাথ সাহাকে। বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে বিশ্বনাথবাবু জামিন পান। পুলিশ তার লাইসেন্স এবং গাড়ির নথি বাজেয়াপ্ত করেছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, বাসটির মালিকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ ও লেক ভিউ রোডের মোড়ে ওই বাসের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন বিপ্লব দাস নামে এক মোটরবাইক আরোহী। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশের দাবি, বাসচালক ট্র্যাফিক সিগন্যাল অমান্য করে জোরে এগোতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে বিপ্লববাবুর মোটরবাইকে ধাক্কা মারেন। এর পরে একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও আরও কয়েকটি দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িকে ধাক্কা মেরে পালাতে যান। কর্তব্যরত ট্র্যাফিক অফিসারেরা বাসটি আটক করে চালককে ধরে লেক থানার হাতে তুলে দেন।
লালবাজার জানিয়েছে, ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়েই অবাক হয়ে যায় পুলিশ। তাঁরা অভিযুক্ত বাসটির নম্বর নিয়ে দেখতে পান গত এক বছরের ৭২৪ বার ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার জন্য তার বিরুদ্ধে জরিমানা হয়েছে।কিন্তু মালিক বা চালক কেউ টাকা জমা করেনি। উল্টে নির্দিষ্ট সময়ে জরিমানা জমা না দেওয়ায় ৩১৬টি মামলা চলে গিয়েছে আদালতে। বাসটি চলতি সপ্তাহেই দু’বার ট্র্যাফিক আইন অমান্য করেছে। গত মাসেও আইন না মানার জন্য ৩৫ বার পুলিশ অফিসারেরা বাসটির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন।
এত বার আইন ভাঙার পরেও কী ভাবে রাস্তায় চলছিল বাসটি? লালবাজার জানিয়েছে, বাসটির বিরুদ্ধে বড় কোন ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগ নেই। সাধারণত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হলেই তার সব নথি এবং বকেয়া মামলা খতিয়ে দেখা হয়। যদি দেখা যায় মামলা বকেয়া রয়েছে, তবে সেই মামলা খালাস করার পরেই গাড়ি ছাড়া হয়।