ফাঁসি এড়িয়েও ১৫ বছর পরে ফের ফাঁসির রায়

২০০১ সাল। মাদক পাচারের দায়ে আনসার রহমান নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেটিই ছিল মাদক পাচারের দায়ে দেশে প্রথম মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ফাঁসি এড়িয়ে জামিন পেয়ে গিয়েছিল আনসার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৫
Share:

২০০১ সাল। মাদক পাচারের দায়ে আনসার রহমান নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেটিই ছিল মাদক পাচারের দায়ে দেশে প্রথম মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ফাঁসি এড়িয়ে জামিন পেয়ে গিয়েছিল আনসার। শুক্রবার সেই আনসারকে ফের ফাঁসির সাজা শোনাল বারাসত আদালত। একই অপরাধে আনসারের শাগরেদ দীপক গিরিকে আদালত ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে।

Advertisement

একই অপরাধে দু’জনের ক্ষেত্রে দু’রকম সাজা কেন?

বিচারক অনির্বাণ দাসের ব্যাখ্যা, বার বার সাজা দিয়েও শোধরানো যায়নি আনসারকে। সাজা ঘোষণার পরে বিচারক আনসারের কাছে তার বক্তব্য জানতে চান। আনসার শুধু বলে, ‘‘যো আপকো মর্জি।’’

Advertisement

ভারত, সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের ৩২টি দেশে মাদক-সহ কেউ ধরা পড়লে অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।

নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে আনসারকে ফাঁসির সাজা শোনানোর পরে আরও পাঁচটি ক্ষেত্রে মাদক চোরাচালানের দায়ে মৃত্যুদণ্ড শুনিয়েছে ভারতের বিভিন্ন আদালত।

তার মধ্যে মুম্বইয়ে ১টি, আমদাবাদ ও চণ্ডীগড়ে ২টি করে সাজার ঘটনা রয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই মৃত্যুদণ্ড এখনও কার্যকর করা যায়নি। প্রতিটি মামলাই উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত এক জনের জেলে মৃত্যুও হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আনসার মাদক-সহ মোট তিন বার ধরা এনসিবি সূত্রের খবর, আনসার প্রথম ধরা পড়ে ১৯৮৭ সালে। কলকাতা পুলিশের হাতে। তখন তার কাছ থেকে ১ কিলোগ্রাম হেরোইন ও ৪৭ কিলোগ্রাম চরস পাওয়া যায়। সে বার দশ বছরের কারাদণ্ড হয় তার।

কিন্তু সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ১৯৯২-তে ভাল ব্যবহারের জন্য ছাড়া পেয়ে যায় সে। এনসিবি আদালতকে জানিয়েছে, জেল থেকে বেরিয়েই ফের মাদক চোরাচালানে নেমে পড়ে আনসার। ১৯৯৫ সালে ফের হেরোইন-সহ সে ধরা পড়ে কলকাপড়েছে। শেষ বার সে আর দীপক ধরা পড়ে ২০০২ সালে। তা পুলিশের হাতে। ধরা পড়ে তার শাগরেদ দীপকও।

২০০১ সালে আনসারকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যায় আনসার। হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় আনসার। সুপ্রিম কোর্ট আনসারকে জামিন দেয়। ইতিমধ্যে জামিন পায় দীপকও।

জামিন পেয়ে ফের দু’জনে মাদক চোরাচালানের কাজ শুরু করে দেয়। ২০০২-এর ৩ ফেব্রুয়ারি সল্টলেকের এসএ ব্লকের রাস্তায় ফের ধরা পড়ে আনসার। তার কাঁধের ঝোলা ব্যাগ থেকে ৩ কিলোগ্রাম হেরোইন পাওয়া যায়। আনসারকে জেরা করে ধরা হয়েছিল দীপক গিরিকে। তার বাড়ি থেকে ৫০ কেজি হেরোইন মেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন