নালা সাফাইয়ে বেরিয়েছে প্লাস্টিক ও আবর্জনা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
কাদামাখা প্লাস্টিকের পাহাড়! সব মিলিয়ে ওজন ১৫০ টনের মতো। গত কয়েক দিন ধরে ওই আবর্জনা সাফাই করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুরকর্মীদের।
অল্প বৃষ্টিতেই জমছিল জল। তাই বিধাননগর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছিল দিন কয়েক আগে। বৃহস্পতিবার দেখা গেল, নালা থেকে পাঁক ও পলি তো উঠলই। সঙ্গে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক। যা বছরের পর বছর নিকাশি নালায় জমে ওই অবস্থার সৃষ্টি করেছে বলেই দাবি পুরকর্তাদের। তাঁরা জানান, প্লাস্টিক ও মাটি মিলে প্রায় ১৫০ টনের মতো আবর্জনা তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫টি গাড়ি ভর্তি করে আবর্জনা ও প্লাস্টিক তুলেছেন পুরকর্মীরা।
শুধু তাই নয়। পুরসভার ধারণা, আগামী ক’দিনে আরও অন্তত ৪০ গাড়ি আবর্জনা উঠবে। যার মধ্যেও বিপুল পরিমাণে প্লাস্টিক থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘মদ ঠিকই আছে, এই তো খাচ্ছি’
কালীপুজোর পরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এই সুকান্তনগরে এক পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। জ্বরে আক্রান্ত হন অনেকে। অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যাচ্ছিল। কারণ অনুসন্ধানে দেখা যায়, এলাকার নিকাশি নালা প্রায় অবরুদ্ধ। এর পরেই ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অংশে নালা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।
আরও পড়ুন: হনুমানও ‘দলিত’! ত্রেতা যুগের বার্থ সার্টিফিকেট কলিতে দিলেন যোগী
এর ফলে প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা আদৌ রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। যদিও এ নিয়ে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস জানার প্রতিক্রিয়া, ‘‘লাগাতার সচেতনতার প্রচার করেই সমস্যা মেটাতে হবে। প্লাস্টিক বন্ধে সব রকমের চেষ্টা চালানো হবে।’’
পুরসভার অভিযোগ, এলাকায় কম খরচে বাড়ি বাড়ি নিকাশি নালা যোগ করে দেওয়া হলেও তা নিয়ে আগ্রহ দেখাননি অধিকাংশ বাসিন্দা। স্থানীয় কাউন্সিলর জয়দেব নস্করের দাবি, ‘‘পুরসভার নিষেধ সত্ত্বেও বাসিন্দাদের সেপটিক ট্যাঙ্ক ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে।’’ পুর প্রশাসনের একাংশের আরও অভিযোগ, এলাকায় অবৈধ নির্মাণ এবং জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। যদিও স্থানীয়দের পাল্টা দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় নিকাশি সাফাই হয়নি। ফলে নালা থেকে এই প্লাস্টিক উদ্ধার অস্বাভাবিক নয়! তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘সচেতনতার কথা বলা হচ্ছে। অথচ কাউন্সিলর কিংবা পুরকর্মীদের তৎপরতাই তো দেখা যায় না এলাকায়!’’
কাউন্সিলর অবশ্য অভিযোগ খারিজ করে বলেন, ‘‘নিকাশি নালা সাফাইয়ের আবেদন করেছিলাম পুরসভার কাছে। তারা তৎপর বলেই এই কাজ সম্ভব হচ্ছে। আর বেআইনি নির্মাণের বিরোধিতা বরাবর করেছি।’’
তবে নালা পরিষ্কারের জেরে এলাকার আর এক অংশে নোংরা জল রাস্তায় উঠে এসেছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। যদিও পুরসভা জানিয়েছে, এক দিকের নালা বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে জল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।