ডেঙ্গিতে বুধবার মৃত্যু হল এক জনের। এ দিন সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বারাসতের লঙ্কাবাগানের বাসিন্দা সায়নী সরকার নামে বছর সাতাশের তরুণীর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় ওই জেলারই আরও এক মহিলা। এ নিয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৪। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচ হাজার। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী জানান, এ দিন আরও ২০০ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫১২৯।
সায়নীর স্বামী তাপস সরকার জানিয়েছেন, চার দিন আগে তাঁর স্ত্রী জ্বরে আক্রান্ত হন। তার পরেই দ্রুত প্লেটলেটের পরিমাণ কমতে থাকে। মঙ্গলবার আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হেমারেজিক ডেঙ্গি হয়েছিল সায়নীর। মঙ্গলবার মৃত্যু হয় গারুলিয়া পুরসভার বাসিন্দা মঞ্জু চট্টোপাধ্যায়ের (৭০)। ১৩ অগস্ট থেকে তাঁর জ্বর ছিল। সে দিনই তাঁকে কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার থেকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল মঞ্জুদেবীকে।
এ দিকে, ডেঙ্গি ছড়িয়েছে রাজভবনের কর্মী আবাসনেও। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পিছনের অংশে এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা মিলেছিল। এ বার রাজভবনের এক কর্মীর ছেলে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় মশা মারার তেল এবং ধোঁয়া ছড়ানোর কাজ করা হবে।
এ দিন মশাবাহী রোগের পাশাপাশি বিশেষ কিছু পতঙ্গের কামড়ে হওয়া রোগ নিয়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিল পুর-প্রশাসন। পুরভবনে অনুষ্ঠিত চিকিৎসকদের সেমিনারে এক ধরনের পোকার কামড়ে হওয়া ব্যাকটিরিয়া ঘটিত রোগ ‘স্ক্র্যাব টাইফাস’ নিয়ে আলোচনা হয়। পুর-স্বাস্থ্য দফতরের মতে, যেখানে জঙ্গলের পরিমাণ বেশি অর্থাৎ পাহাড়ি অঞ্চল এবং গ্রাম বাংলায় ওই রোগের প্রকোপ দেখা যায়। সম্প্রতি উল্টোডাঙায় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের এক কিশোরী ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউতই প্রথম বিষয়টি পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরে জানান। মাত্র এক জন হলেও রোগটি সম্পর্কে পুর-চিকিৎসকদের শিক্ষিত করতেই এই সেমিনারের আয়োজন হয় বলে জানান স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। হাজির ছিলেন ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তাও।