21st July TMC Rally

21st July TMC Rally: একুশের আগেই ভিড় উপচে পড়ল শিবিরে

২১ জুলাইয়ের সভার আগের দিন বুধবার শহরে তৃণমূলের শিবির ঘুরে দেখা গেল, ভিড়ের জন্য অনেককেই ঠাঁই নিতে হয়েছে রাস্তায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ ০৫:২৫
Share:

n ঠাসাঠাসি: ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে এ ভাবেই রয়েছেন সমাবেশের জন্য আসা লোকজন। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

‘‘আর লোক নেওয়া যাবেই না। কোথায় থাকতে দেব? কী? বাস পাঠাবে? অসম্ভব।’’— উত্তেজিত ভাবে মোবাইলে কথাগুলো বলে গেলেন কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে ২১ জুলাইয়ের শিবিরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা। জেলার বাস পর পর ঢোকার খবর আসছে। ফোন রেখে সুশান্তর মন্তব্য, ‘‘যত লোকের বন্দোবস্ত হয়েছে, তার দেড় গুণ বেশি লোক এখনই এসে পড়েছেন!’’

Advertisement

২১ জুলাইয়ের সভার আগের দিন বুধবার শহরে তৃণমূলের শিবির ঘুরে দেখা গেল, ভিড়ের জন্য অনেককেই ঠাঁই নিতে হয়েছে রাস্তায়। কেউ কেউ অভিযোগ করলেন, দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ভাত নিতে হচ্ছে। কোথাও শৌচাগারের লম্বা লাইন চলে এসেছে শোয়ার জায়গা পর্যন্ত। যা দেখে দিনের শেষে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলে দিলেন, ‘‘৪৫-৫০ হাজার লোকের বন্দোবস্ত করেছিলাম। বিকেল পর্যন্তই প্রায় ৮০ হাজার লোক চলে এসেছেন। ২১ জুলাইয়ের ভোরের আগে এক লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। আমরা এত লোককে জায়গা দিতে পারছি না।’’

ভিড়ের বিচারে এগিয়ে ছিল ইডেন গার্ডেন্স সংলগ্ন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র। সেখানে পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের কর্মী-সমর্থকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। দুপুরে সেখানে পৌঁছে দেখা গেল, শিবিরে তিলধারণের জায়গা নেই। নেতা-নেত্রীরা দফায় দফায় দেখতে আসায় ফাঁকা রাখতে হচ্ছে শিবিরের মাঝের রাস্তা। প্রথম সারির কেউ এলে শিবিরে ঢোকা-বেরোনোর পথও বন্ধ। সেখানেই পুরুলিয়ার বাসিন্দা সুমেধা সাঁতরা বললেন, ‘‘দু’ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকে তবে আজ ভাত পেয়েছি। প্রচুর লোক।’’ ব্যাগপত্র নিয়ে রাস্তায় গিয়ে বসা সনাতন হাঁসদা আবার বললেন, ‘‘এত ছোট জায়গায় এত লোক যে দমবন্ধ অবস্থা হচ্ছে।’’

Advertisement

সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলা প্রাঙ্গণের শিবিরে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার থেকে আগতদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই তাঁদের অনেকে সেখানে আসতে শুরু করেছিলেন। এ দিন বার বার ঘোষণা হওয়া সত্ত্বেও বহু মানুষকেই মাস্ক না-পরে থাকতে দেখা গিয়েছে। কোচবিহারের মাথাভাঙা থেকে আসা নজিমুদ্দিন মিয়াঁ নামে এক ব্যক্তিকে দেখা গেল, তৃণমূলের পতাকার রঙের পায়জামা ও পাঞ্জাবি পরে শ্লোগান দিচ্ছেন। মাস্কের কথা মনে করাতে তাঁর উত্তর, ‘‘আমার কিছু হবে না।’’ একই রকম উদাসীন মাথাভাঙা থেকে আসা কমলিনী নস্কর বা কোচবিহারের তন্ময় ঘোষেরা। সেখানকার মেডিক্যাল শিবিরে হাজির চিকিৎসকদের দাবি, কোভিড সন্দেহভাজন কাউকে তাঁরা পাননি। কয়েক জন জ্বর, সর্দি-কাশির কথা জানিয়ে ওষুধ নিলেও বদহজমের সমস্যা নিয়েই লোকে আসছেন বেশি।

সকালে কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে ঢুকে দেখা গেল, টেবিল ফ্যান নিয়ে হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম। মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ থেকে আগতদের থাকার ব্যবস্থা ছিল সেখানে। সহিদুল মোল্লা নামে এক ব্যক্তি আর এক জনের হাত থেকে টেবিল ফ্যান কেড়ে নিয়ে বললেন, ‘‘জেলখানার পরিস্থিতি হবে জানলে আসতাম না। গরমে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছি।’’ যিনি পাখার লড়াইয়ে হারলেন তাঁর মন্তব্য, ‘‘ছেলেগুলো সব চিড়িয়াখানা ঘুরতে গিয়েছে। না হলে দেখিয়ে দিতাম।’’ ওই শিবিরেই কোলের শিশুকে নিয়ে হাজির নমিজা বিবির মন্তব্য, ‘‘কলকাতা ঘুরতে এসে একটু কষ্ট করতে হলে না হয় করব! এত রাগারাগি কেন?’’ পাশেই দাঁড়ানো ওই জেলার তৃণমূল নেতা বললেন, ‘‘কাল দিদির কথা শুনেই সব রাগ ঠান্ডা হয়ে যাবে। আপাতত পেট ঠান্ডা করতে ডাল আর ডিম-ভাত আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement