অভিযান: গণ্ডগোলের খবর পেয়ে এলাকায় ঢুকছে পুলিশ বাহিনী। মঙ্গলবার, হাটখোলায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
গঙ্গার পাড়ের একটি ঘরে এবং সংলগ্ন এলাকায় নেশা করার অভিযোগ কেন্দ্র করে দুই পা়ড়ার গোলামাল। পরে হাতাহাতি, একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট, কাচের বোতল ছোঁড়াছুড়ির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল শোভাবাজারের বাজার এলাকা। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ওই এলাকা কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। প্রকাশ্য রাস্তায় দু’পক্ষের গোলমালে বাজারের অনেক দোকানদারই ভয়ে দোকান বন্ধ করে দেন। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ঘটনায় দু’পক্ষেরই সাত জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে গঙ্গার ধারে শোভাবাজার ঘাট সংলগ্ন মন্দিরে পুজো দিয়ে তাড়িখানার বাসিন্দারা ফেরার পথে ভাঙা বস্তির লোকজনের সঙ্গে তাঁদের বচসা এবং পরে মারামারি হয়। দুপুরের সেই গোলমাল রাতে আরও দানা বাঁধে। মঙ্গলবার সকালে শোভাবাজার স্ট্রিটের উপরে বাজার বসতেই দু’পক্ষ একে অপরের দোকানে চড়াও হয়। ভাঙচুর চালায় দোকানে।
যদিও ভাঙা বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, গঙ্গার পাড়ে বসে তা়ড়িখানার ছেলেরা নেশা করে এবং অসামাজিক কাজ করে। ফলে তাঁরা কেউ গঙ্গায় স্নান করতে বা ঘাটে এসে বসতে পারেন না। তার প্রতিবাদ করাতেই তাড়িখানার লোকজন এসে ভাঙচুর চালান এবং তাঁদের মারধর করেন। ঘটনায় তাঁদের চার-পাঁচ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফের চোখ রাঙাচ্ছে তাপপ্রবাহ
তাড়িখানার বাসিন্দারা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা জানিয়েছেন, গত বছর শীতলা পুজোর বিসর্জনের সময়ে তাড়িখানার মেয়েদের সঙ্গে অসভ্যতা করেছিল ভাঙা বস্তির কিছু যুবক। তখন তাড়িখানার লোকজনকে মারধরও করে তারা। এর জেরে তাড়িখানার বাসিন্দারা গঙ্গার পাড়ে খুব একটা যেতেন না। অভিযোগ, সোমবার কয়েক জন গঙ্গার পাড়ে যেতেই ভাঙামাঠের লোকজন তাঁদের উপর চ়ড়াও হয়। মারধরও করে। পরে মঙ্গলবার সকালে বাজার খুলতে নতুন করে ভাঙচুর চালিয়ে গিয়েছে ভাঙামাঠের লোকজন। আরও অভিযোগ, জোড়াবাগান থানার পুলিশ পুরো ঘটনা জানা সত্ত্বেও
উল্টে তাঁদেরই মারধর করে গোলমালের সময়ে।
যদিও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরেই গঙ্গার পাড় সংলগ্ন এলাকা আশপাশের ছেলেদের নেশা করার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাইরে থেকেও অনেকে সেখানে আসেন। সোমবার সে রকমই এক যুবকের সঙ্গে ভাঙামাঠের লোকজনের গোলমাল হয়। কিন্তু সেই যুবকের বেশ কিছু বন্ধু তাড়িখানায় থাকে বলে সেখানের বাসিন্দারাও ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে গোলমাল বাঁধলেও রাতে মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে দু’পক্ষ যে ফের একে অপরের উপর চড়াও হবে তা বোঝা যায়নি।