বাসকর্মীর ‘মানবিক’ ব্যবহারে জরিমানা

রাজেশবাবু বলেন, ‘‘মানুষের জন্যই তো আইন। আইনের জন্য মানুষ নয়। আমি নিজে ওই পুলিশকর্মীকে জরিমানা না করতে আবেদন করি। বাসযাত্রীদেরও অনেকে আবেদন করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাসস্টপ থেকে এগিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এক দৃষ্টিহীন যাত্রী। তাঁকে দেখে বাস থামিয়েছিলেন চালক। অভিযোগ, সেই কারণে বাসের কন্ডাক্টরকে জরিমানা করলেন কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ। তাঁকে জরিমানা না করার জন্য সেই দৃষ্টিহীন যাত্রী থেকে শুরু করে বাসের অন্য যাত্রীরা একাধিক বার অনুরোধ করলেন ঠিকই। কিন্তু সেই পুলিশকর্মী তাঁর নিজের অবস্থান থেকে সরেননি বলেই অভিযোগ।

Advertisement

দৃষ্টিহীন ওই ব্যক্তির নাম রাজেশ ঠাকুর। তিনি কলকাতা বিমানবন্দরে কাজ করেন। তিনি জানান, ২৩ তারিখ সন্ধ্যায় অফিস থেকে বেরিয়ে বিমানবন্দরের দু’নম্বর গেটের কাছে কলকাতামুখী লেনে দাঁড়িয়েছিলেন। এক সহকর্মী তাঁকে বাসে তুলে দিতে গিয়েছিলেন। বালি-করুণাময়ী রুটের একটি বাস তাঁকে তুলতে বাসস্ট্যান্ড থেকে কিছুটা রাস্তা এগিয়ে তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায়।

রাজেশবাবুর কথায়, ‘‘নির্ধারিত স্টপে একটি বাস দাঁড়ালে অন্য বাস জায়গা না পেয়ে এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে দাঁড়ায়। আমার গন্তব্যের কয়েকটি বাস না দাঁড়ানোয় আমি কিছুটা এগিয়ে যাই। সে সময়ে একটি বাসকে থামতে অনুরোধ করা হয়। আমাকে দেখে বাস থামান কন্ডাক্টর। সে সময়ে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী সেখানে এসে হাজির হয়ে বাসের কন্ডাক্টরকে ডাকেন। নির্ধারিত স্টপের বদলে অন্যত্র বাস থামানোয় তিনি জরিমানা করেন।’’

Advertisement

ঘটনাটি জানার পরে অনেকেরই অভিযোগ, বিনা হেলমেটে কিংবা দু’জনের বেশি সওয়ারি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে বাইক ছোটে। ভিআইপি রোডে বিশেষত রাতের দিকে বাসে বাসে রেষারেষি হয়। কমিশনের জন্য যত্রতত্র বাস দাঁড়িয়ে যায়। তখন সে সব কেন পুলিশের চোখ এড়িয়ে যায়, ঘটনার পরে সেই প্রশ্ন তুলেছেন সে দিন বাসে থাকা কয়েক জন যাত্রী। তাঁদের তাই প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রে এক জন বাসকর্মী যখন মানবিকতার পরিচয় দিলেন, তখন কেন পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে?

রাজেশবাবু বলেন, ‘‘মানুষের জন্যই তো আইন। আইনের জন্য মানুষ নয়। আমি নিজে ওই পুলিশকর্মীকে জরিমানা না করতে আবেদন করি। বাসযাত্রীদেরও অনেকে আবেদন করেন। কিন্তু ওই পুলিশকর্মী কারও আবেদনে সাড়া দেননি।’’ তিনি জানান, মৌখিক ভাবে এক পুলিশ আধিকারিককে বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রয়োজনে তিনি লিখিত ভাবে বিধাননগর কমিশনারেটকে জানাবেন।

যদিও প্রবীণ নাগরিক, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সাহায্যে ইদানীং বিভিন্ন কাজ করছে বিধাননগরের পুলিশ। ফলে ঘটনার কথা শুনে বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিকের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রবীণ নাগরিক কিংবা শারীরিক সমস্যা থাকা লোকজনের ক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিতেই পদক্ষেপ করা হয়। ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি এর বিপরীত কিছু ঘটে থাকে, তবে সেটা অনভিপ্রেত।

তেমন কিছু ঘটেছে কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন