Accident

ভিড়ে ঠাসা ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর জখম পরীক্ষার্থী

সুনীতার ব্যাগে থাকা কলেজের পরিচয়পত্র দেখে হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হয় ব্যারাকপুর মহাদেবানন্দ মহাবিদ্যালয়ে। কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরাও হাসপাতালে ছুটে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:২১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর জখম হলেন এক কলেজছাত্রী। দুর্ঘটনায় তাঁর দু’টি পায়ের পাতাই কাটা গিয়েছে। চোট লেগেছে মাথাতেও। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে পলতা স্টেশনে।

Advertisement

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ব্যারাকপুরের মহাদেবানন্দ মহাবিদ্যালয়ের হিন্দি অনার্সের ছাত্রী সুনীতা বর্মা এ দিন হুগলির চাঁপদানির বি এম রোডের বাড়ি থেকে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন পানিহাটি মহাবিদ্যালয়ে। সেখানেই তাঁর দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষার আসন পড়েছিল। গঙ্গা পেরিয়ে এসে শ্যামনগর থেকে ট্রেন ধরে তাঁর সোদপুর স্টেশনে নামার কথা ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পলতা স্টেশনে দু’নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার মুহূর্তে ভিড়ে ঠাসা কামরার দরজায় ঝুলতে থাকা ওই ছাত্রীর হাত হাতল থেকে ফস্কে যায়। প্ল্যাটফর্ম ও কামরার ফাঁকে ঢুকে যান সুনীতা। বেশ কিছুটা ঘষটে ট্রেনের নীচে পড়ে যান তিনি। যাত্রীদের চিৎকারে ট্রেন কিছুটা এগিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তত ক্ষণে রক্তাক্ত অবস্থায় রেললাইনে পড়ে থাকা সুনীতা জ্ঞান হারিয়েছেন। দুর্ঘটনায় তাঁর দু’টি পা মারাত্মক ভাবে জখম হয়। তাঁকে উদ্ধার করে ব্যারাকপুরের বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরাও তাঁর পায়ের অবস্থা দেখে শিউরে ওঠেন।

Advertisement

সুনীতার ব্যাগে থাকা কলেজের পরিচয়পত্র দেখে হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হয় ব্যারাকপুর মহাদেবানন্দ মহাবিদ্যালয়ে। কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরাও হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকেরা জানান, তরুণীর দু’টি পা গোড়ালির নীচ থেকে বাদ দিতে হতে পারে। বেলার দিকে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ওই ছাত্রীকে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পলতা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার ঠিক আগে বৃষ্টি হয়েছিল।

হুগলির চাঁপদানির বি এম রোডে বাড়ির সামনেই লিট্টির ছোট একটি দোকান আছে সুনীতাদের। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শৈশবেই মাকে হারিয়েছেন সুনীতা। বাবা মারা যাওয়ার পরে সৎমা ও ভাইয়ের সঙ্গে থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি দোকানটি চালান সুনীতা। সৎমা পুনম বর্মা বলেন, ‘‘মেয়ের খবর পেয়ে ছেলেকে নিয়ে এসেছি। কী ভাবে এ রকম হল, কিছুই জানি না। চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছি দেখতে, যদি মেয়েটার পা দুটো জোড়া লাগানো যায়। আমাদের টাকাও নেই যে, ওর চিকিৎসা করাব!’’

সন্ধ্যায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীতার একটি পায়ের পাতা জোড়া লাগানোর চেষ্টা করা হলেও অন্য পা গোড়ালির উপর থেকে কেটে বাদ হয়ে যাওয়ায় জোড়া লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর, তরুণীর অন্য পা-টি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন