দু’পক্ষের মারামারিতে কান কাটল কাউন্সিলর ‘ঘনিষ্ঠের’ 

দু’পক্ষের মারামারিতে মানিকতলায় কান কাটা গেল এক ব্যক্তির। তিনি কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয়দের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৯
Share:

আহত সঞ্জয় সাউ। নিজস্ব চিত্র

দু’পক্ষের মারামারিতে মানিকতলায় কান কাটা গেল এক ব্যক্তির। তিনি কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয়দের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় পাল্টা মারধরে এক যুবকও গুরুতর জখম হয়েছেন। দু’পক্ষই মানিকতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) ধারায় কাউন্সিলরের ‘ঘনিষ্ঠের’ বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, এক যুবক এবং তাঁর বাবাকে কবিরাজবাগান এলাকায় বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার গভীর রাতে মানিকতলা থানায় খবর যায়। পুলিশের একটি দল গিয়ে অজয় সাইনি নামের ওই যুবককে উদ্ধার করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর মাথায় সেলাই পড়েছে এবং পিঠে গুরুতর চোট লেগেছে। তাঁর ডান হাতের একাংশও কেটে গিয়েছে। পুলিশকে অজয় জানিয়েছেন, বেশি রাতে কেন রাস্তায় দেখা যায়, এ নিয়ে দিন কয়েক আগেই তাঁকে শাসিয়েছিলেন কাউন্সিলর ‘ঘনিষ্ঠ’ সঞ্জয় সাউ। মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে রাস্তায় দেখে সঞ্জয় এবং তাঁর দলবল মারধর করে বলে অভিযোগ। এর পরে রাত দেড়টা নাগাদ দীপঙ্কর দাস ওরফে হুলো নামে এক যুবককে নিয়ে সঞ্জয়ের বাড়িতে যান অজয়।

অজয় বুধবার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার আর মাথা ঠান্ডা রাখতে পারিনি। হুলোকে নিয়ে সঞ্জয়দার বাড়ি গিয়েছিলাম কথা বলতে। সেখানেও আমাদের মেরেছে!’’ অজয়ের মা নীলুদেবীর অভিযোগ, ‘‘ছেলেকে রাস্তায় দেখলেই হেনস্থা করত। মঙ্গলবার তো মেরেই ফেলত। আমি আর ওর বাবা বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মেরেছে।’’ শাড়িতে রক্তের দাগ দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শাড়ি দিয়ে রক্ত চেপে ধরে ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’

Advertisement

অজয়ের অভিযোগ উড়িয়ে সঞ্জয় জানান, প্রতি রাতেই পাড়ায় প্রকাশ্যে মদ্যপান করতেন অজয়রা। মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা হত বলেও তাঁর অভিযোগ। বললেন, ‘‘একাধিক বার নিষেধ করেছিলাম। মঙ্গলবার রাতে বিষয়টা চরম আকার নেয়। পাড়ার লোকজন ধরে অজয়কে মারেন। সেই রাগে রাত দেড়টা নাগাদ দীপঙ্করকে নিয়ে আমার বাড়িতে মারতে যায় অজয়।’’ সঞ্জয়ের দাবি, ওই রাতে ফোন করে তাঁকে রাস্তায় আসতে বলেন অজয় এবং দীপঙ্কর। ‘‘বেরিয়ে দেখি, পিস্তল এনেছে দীপঙ্কর। নিজেকে বাঁচাতে ওদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ি। সেই সময়ই বন্দুকের বাট লেগে আমার কান কেটে ঝুলে পড়ে।’’— এমনটা দাবি সঞ্জয়ের। তাঁকেও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে কানে সেলাই করা হয়।

বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও দীপঙ্করের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছেন। মানিকতলা থানার তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘দু’পক্ষই অভিযোগ করেছে। দোষীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে কান কাটার কারণ সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট কিছু জানাননি তদন্তকারীরা। তাঁর ‘ঘনিষ্ঠের’ বিরুদ্ধেই মারধরের এই অভিযোগ শুনে কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সঞ্জয় ওই এলাকায় ভাল কাজ করছে। কিন্তু আমি সত্যিই বিষয়টি জানি না। আমার কাছে কেউই আসেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন