এক লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে বুধবার জামিন পেল রেড রোডে ঘোড়াকে ধাক্কা মারার ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালক।
প্রক্রিয়াটা অবশ্য এত সহজ ছিল না। এক সময়ে অভিযুক্তকে হোমে পাঠানোর কথাও বলেছিলেন জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের বিচারক। কিন্তু তার পরে নিজের মত পাল্টান তিনি। জামিন মঞ্জুর করেন ওই নাবালকের এবং কাউন্সেলিংয়ের জন্য তাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে নিয়মিত জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির হওয়ার পরামর্শও দেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ রেড রোডে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে একটি সেডান আচমকাই ধাক্কা মারে একটি ঘো়ড়াকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ঘো়ড়াটির। ঘটনাস্থল থেকে ওই নাবালককে অবশ্য পলাতক দেখিয়েছিল পুলিশ। যদিও সোমবারই এক নাবালককে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ময়দান থানায় বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। জানা যায়, অভিযুক্ত ওই নাবালক টলিউডের এক প্রযোজকের ছেলে।
বুধবার দুপুরে ওই নাবালককে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করায় পুলিশ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। নাবালকের পক্ষে দাঁড়িয়ে সওয়াল করেন তিন আইনজীবী দানিশ হক, রাজদীপ মজুমদার এবং বিশাল কুমার। সওয়াল-জবাব শুরু হতেই বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, নাবালক হওয়ায় যেখানে তার কোনও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, সেখানে কী ভাবে সে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিল? বিচারকের প্রশ্নের মুখে ওই নাবালক স্বীকার করে, গাড়ি নিয়ে বেরনো তার ভুল হয়েছিল। একই সঙ্গে সে জানায়, বাড়ির গাড়িচালককে টাকা দিয়ে ‘ম্যানেজ’ করে সে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে সকালে ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি চালানো অভ্যাস করছিল।
ওই নাবালকের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হননি বিচারক। তিনি তাকে হোমে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। এর পরেই অভিযুক্তের পক্ষের তিন আইনজীবী বিচারককে জানান, ছেলেটি ইচ্ছাকৃত ভাবে গাড়ি নিয়ে গিয়ে ঘোড়াটিকে ধাক্কা মারেনি। বরং ঘোড়াটি হঠাৎ রাস্তায় উঠে সামনে এসে পড়ায় অনভিজ্ঞ হাতে সে স্টিয়ারিং সামলাতে পারেনি। যার ফলেই এই দুর্ঘটনা।
ওই নাবালকের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলায় যে ধারাগুলি প্রয়োগ করা হয়, সেগুলি জামিনযোগ্য ছিল। এই ঘটনাকে অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা বিবেচনা করে ওই নাবালককে জামিন দেওয়ার আর্জি জানান আইনজীবীরা। যদিও সরকারি আইনজীবী ‘নাবালকের গাড়ি চালানোর প্রবণতাটি অন্যায়’ এবং ‘দুর্ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক’ বলে দাবি করে জামিনের বিরোধিতা করেন। কিন্তু দাবি মেনে নেননি বিচারক শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়।