Murder

Murder: ফুটপাত থেকে রক্তাক্ত যুবককে উদ্ধার, রহস্য

হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহত যুবকের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁর কপালের উপরের অংশে গভীর আঘাত রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, পাথর জাতীয় ভারী কিছু বস্তু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ০৭:২৬
Share:

ফুটপাতের উপরে পাথরে লেগে রক্ত। বুধবার, বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ে। নিজস্ব চিত্র

ফুটপাতে পাতা ক্যাম্পখাটের পাশে গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে এক যুবক। রক্তে ভেসে যাচ্ছে আশপাশ। বুধবার ভোরে বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ে ওই দৃশ্য দেখে স্থানীয় জোড়াবাগান থানায় খবর দিয়েছিলেন প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনো আর এক যুবক। খবর পেয়ে পুলিশ ওই আহত যুবককে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

ওই হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহত যুবকের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁর কপালের উপরের অংশে গভীর আঘাত রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, পাথর জাতীয় ভারী কিছু বস্তু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের নাম ওমপ্রকাশ শর্মা ওরফে শিখণ্ডী। ৮০, বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ে আহিরীটোলা বঙ্গ বিদ্যালয় স্কুলের কাছে ফুটপাতে তাঁদের একটি ভাতের হোটেল রয়েছে। মা রিনা শর্মার সঙ্গে ওই হোটেলটি চালান ওমপ্রকাশ। তাঁর বাবা রামনাথ শর্মা পেশায় ভ্যানচালক। প্রতিদিন রাতে হোটেল বন্ধ করে রিনাদেবী মহর্ষি দেবেন্দ্র রোডের বস্তিতে তাঁদের ঘরে চলে যেতেন। আর হোটেলের সামনে ফুটপাতে ক্যাম্পখাট পেতে ঘুমোতেন ওমপ্রকাশ। এ দিন ভোরে ওই ক্যাম্পখাটের সামনে থেকেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে।

Advertisement

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া জোড়াবাগান থানার এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘তখনও ভোরের আলো ভাল করে ফোটেনি। ফুটপাতের ক্যাম্পখাটে হেলান দেওয়া অবস্থায় পড়ে ছিলেন ওই যুবক। জ্ঞান ছিল না। আশপাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। কাছেই ফুটপাতের পাশে পড়ে থাকা কয়েকটি পাথরের উপরেও রক্তের ছোপ ছিল। এর পরে দ্রুত ওই তরুণকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’

পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতের উপরেই নীল রঙের প্লাস্টিকে ঢাকা হোটেলটি। ক্যাম্পখাটে তো বটেই, রাস্তাতেও রক্তের দাগ স্পষ্ট।

জোড়াবাগান থানার তদন্তকারীদের পাশাপাশি এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘যে ভাবে আঘাত লেগেছে, তাতে ভারী কিছু দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আহতের জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। কোনও ভাবে খাট থেকে পড়ে গিয়ে এমন কাণ্ড কি না, তা-ও দেখতে হবে।’’

ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের আশপাশে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ওমপ্রকাশের কয়েক জন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জেনেছে, হোটেল চালানোর পাশাপাশি গাড়ি ধোয়া, ভ্যান চালানোর মতো কাজও করতেন ওমপ্রকাশ। তবে এর মধ্যেই নেশা করার জন্য এলাকার অনেকের থেকেই তাঁকে টাকা ধার করতে দেখা যেত। নেশা করে ঝামেলায় জড়ানোও ছিল তাঁর নিত্যদিনের ঘটনা। সেই থেকেই এমন কাণ্ড কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

তবে ওমপ্রকাশের মা রিনাদেবী বলেন, ‘‘গত সোমবার ছেলে করোনার প্রতিষেধক নিয়েছে। তাই শরীরটা এমনিই ভাল ছিল না ওর। মঙ্গলবার রাতে সে জন্য নেশাও করেনি। রাতে ওকে খাবার দিয়ে আমি বাড়ি চলে এসেছিলাম। ভোরে শুনি এই ঘটনা। কিছুটা দূরে ফুটপাতেই ঘুমোন ওর বাবা। তিনিও কিছু টের পাননি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement