ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ন’মাস। এখনও কিশোর আবেশ দাশগুপ্তের মৃত্যু রহস্যের জট কাটল না। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন আবেশের মা!
আবেশের মা রিমঝিম দাশগুপ্ত শুক্রবার জানান, তাঁদের পরিবারের তরফে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে রিপোর্ট এলে জানা যাবে আবেশের মৃত্যুর কারণ।
কিসের রিপোর্ট? লালবাজার গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আবেশের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নাকি খুন? তা জানতে ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। আবেশের মৃত্যুর পরে তাঁর বন্ধুরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের কথোপকথন মুছে দিয়েছিল। সেগুলি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিকে দেওয়া হয়েছে। সেগুলির রিপোর্টও আটকে রয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, চলতি মাসেই সেই রিপোর্ট আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পরে আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
গত ২৩ জুলাই বালিগঞ্জের সানি পার্কে বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন আবেশ। আবাসনের বেসমেন্টে পার্টি চলাকালীন রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। গড়িয়াহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে আবেশকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ময়না-তদন্তে জানা যায়, ধারালো বস্তুর আঘাতে শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিরা কেটে গিয়েছিল। তাতেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল।
প্রশ্ন উঠেছে, ফরেন্সিক রিপোর্ট পেতে এত সময় লাগছে কেন?
তদন্তকারীরা জানান, আবেশের বন্ধুদের অধিকাংশই আই-ফোন ব্যবহার করত। ওই ফোন থেকে সহজে তথ্য উদ্ধার করা যায় না। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটের ক্ষেত্রেও একই সমস্যার মুখে প়়ড়তে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করতে একটু সময় দেওয়া প্রয়োজন বলেও দাবি গোয়েন্দাদের। তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ঘটনার আগের-পরের সিসিটিভির ফুটেজ ও ঘটনাস্থলে থাকা বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আবেশের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে তার একটি ধারণা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে আবেশ জখম হওয়ার পর দুই বন্ধুর দ্রুত ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যাওয়া-সহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আরও যাচাই প্রয়োজন বলে মনে করেছেন তদন্তকারীরা। ‘‘তাই এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছি না,’’ মন্তব্য লালবাজারের এক কর্তার।